কাঠমাণ্ডু: মুম্বাইয়ের বিখ্যাত ডাব্বাওয়ালা সম্প্রদায় ছয় বছর আগে ব্রিটিশ রাজপরিবারের বর্তমান প্রিন্স চার্লস এবং তার বহুদিনের প্রেমিকা ক্যামিলা পার্কারের বিয়েতে উপহার পাঠিয়ে বিশ্বজুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল। এবার প্রিন্স উইলিয়াম ও কেট মিডলটনের বিয়েতে হবু দম্পতির উদ্দেশে এমনই মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে ভারতের পার্শ্ববর্তী দেশ নেপালের হিজড়া সম্প্রদায়।
মুম্বাইয়ে অফিসগামী কয়েক লাখ লোকের দুপুরের খাবার সরবরাহকারীদের ডাব্বাওয়ালা বলে ডাকা হয়।
নেপালের পুরুষতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থায় সবচেয়ে বঞ্চনার শিকার হিজড়া সম্প্রদায়। ২০০১ সালে দেশটিতে সমকামীদের অধিকার আন্দোলন শুরুর পর থেকে কিছুটা ক্ষমতায়ন হয়েছে বলে মনে হয়।
নেপালি পার্লামেন্টের সদস্য সুনীল বাবু পান্ত বলেন, বিয়ে এবং জন্মদিনে খোঁজাদের আমন্ত্রণ জানানো নেপালের বহুদিনের একটি অনন্য ঐতিহ্য। লোকজন এসব অনুষ্ঠানে তাদের উপস্থিতি মঙ্গলজনক বলে মনে করে এবং তাদের আশীর্বাদ চায়। নেপালের জনকপুরে জানকি মন্দিরে এমন অনুষ্ঠানে হিজড়াদর জন্য আলাদা কক্ষ রাখা হয়েছে।
সুনীল বাবু নেপাল পার্লামেন্টের একমাত্র সদস্য যিনি প্রকাশ্যে নিজেকে একজন সমকামী বলে দাবি করেন। দক্ষিণ এশিয়ায় সমকামীদের অধিকার আন্দোলনের সঙ্গে তিনি জড়িত।
২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত ব্লু ডায়মন্ড সোসাইটি নামে একটি বেসরকারী সংগঠন নেপালে প্রথম এ আন্দোলন শুরু করে। তাদের দাবির মুখে নেপাল এখন দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ যেখানে সমলিঙ্গের বিয়ের ব্যাপারে আদালতের স্বীকৃতি রয়েছে।
সুনীল বলেন, প্রবীণ হিজড়ারা এখনো ভুলতে পারেন না সেই ১৯৭০ সালে নেপালের যুবরাজের ঝলমলে রাজকীয় বিয়ের কথা। সেখানে তাদের নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল। এখন আবার তারা সমকামী নারী-পুরুষদের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে উইলিয়াম ও কেটকে আশীর্বাদ জানিয়েছে।
হিজড়া সংস্কৃতির প্রথম বিকাশ ঘটে মুঘল আমলে। মুঘল রাজারা আদালতে এবং হেরেমে হিজড়াদের জন্য আলাদা আসন রাখতেন। সে সময় তারা বেশ ক্ষমতাবানও ছিলেন।
তবে, ভারতবর্ষে ইংরেজ উপনিবেশের পর থেকেই এ সম্প্রদায় অচ্ছুত এবং সমাজের একটি লজ্জা বলে গণ্য হতে শুরু করে। সুনীল বাবুর ভাষ্যমতে, নেপালের হিজড়াদের আশা প্রিন্স উইলিয়াম তার মা প্রিন্সেস ডায়ানার মতো সমকামীদের অধিকারের পক্ষে অবস্থান নেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১১