সিঙ্গুাপুর: এশিয়ার টাইগার খ্যাত সিঙ্গাপুরের স্বপ্নদ্রষ্টা লি কুয়ান ইউ ৮৭ বছর বয়সেও দেশটির সাধারণ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। তিনিই বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব।
আগামী ৭ মে অনুষ্ঠেয় সিঙ্গাপুরের সাধারণ নির্বাচনে তানজং পাগার আসন থেকে নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন লি। অসম্ভব জনপ্রিয়তার কারণে বিশ্লেষকদের ধারণা, লি আবারও মন্ত্রিসভায় ফিরবেন।
সিঙ্গাপুরের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লি কুয়ান প্রায় তিন দশক ধরে সিঙ্গাপুর শাসন করেছেন। ১৯৫৯ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতার আগে ও পরে। এরপর সিঙ্গাপুরের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী গহ চক তং লিকে জ্যেষ্ঠ মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। ২০০৪ পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর ২০০৪-এ লির বড় ছেলে লি সিয়েন লুং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে তার জন্য মিনিস্টার মেনটর নামের নতুন একটি পদ সৃষ্টি করা হয়। বর্তমান মন্ত্রিসভা ভেঙে ফেলার আগ পর্যন্ত তিনি ওই পদে বহাল ছিলেন।
লি কুয়ান সিঙ্গাপুরের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ১৯৬৫ সালে মালয়েশিয়ার কাছ থেকে পৃথক হয়ে সিঙ্গাপুর স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। একইসঙ্গে ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক শাসনের কবল থেকেও মুক্ত হয় দেশটি। এর আগে ১৯৫৯ থেকে ১৯৬৩ পর্যন্ত দেশটি স্বশাসনের ভিত্তিতে চলে।
সিঙ্গাপুরের প্রথম রাজনৈতিক দল পিপলস অ্যাকশন পার্টির (পিএপি) প্রতিষ্ঠাতাও তিনি। ১৯৫৯ থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত তিনি পিএপির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন।
প্রাকৃতিক কোনো সম্পদ না থাকা সত্ত্বেও একটি অনুন্নত দেশকে তিনি নিয়ে গেছেন উন্নত দেশের কাতারে। এটা কেবল তারই নেতৃত্বে সম্ভব হয়েছে। লি কুয়ান দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রভাবশালী রাজনীতিকদের এক নাম।
লি কুয়ান ইউ এর জন্ম ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৯২৩; সিঙ্গাপুরে। লি জন্মসূত্রে চীনা বংশোদ্ভূত। চার পুরুষ আগে তার পূর্বপুরুষ চীন থেকে সিঙ্গাপুরে আসেন।
লি কুয়ানের ইংরেজি নাম হ্যারি। এটা তার বাবার দেওয়া নাম। তিনি ‘হ্যারি লি’ নামেও পরিচিত। রাজনীতিতে প্রবেশের পর তিনি চীনা নামটি ব্যবহার করা শুরু করেন। মাঝে মাঝে তাকে হ্যারি লি কুয়ান ইউ নামেও অভিহিত করা হয়। লি কুয়ান বিয়ে করেন ১৯৫০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। স্ত্রী জিয়োক চু ২০১০-এর ২ অক্টোবর মারা যান। লির দুই ছেলে ও এক মেয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১১