দামাস্কাস: সিরিয়ায় রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে চলমান গণবিক্ষোভের ধারাবাহিকতায় শুক্রবার জুমার পর আয়োজিত বিক্ষোভ র্যালিতে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বহুসংখ্যক লোক মারা গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। খবর বিবিসি ও এএফপির।
শুক্রবার দিনটি ছিল সিরিয়ার ইতিহাসে ভয়াবহ রক্তস্নাত একটি দিন। এদিন সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
এর একদিন আগে বৃহস্পতিবার গত ৪৮ বছর ধরে বহাল জরুরি আইন প্রত্যাহার করা হয়। সেই সঙ্গে বিতর্কিত রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা আদালতেরও বিলুপ্তি ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আন্দোলনকারীরা রাজনৈতিক স্বাধীনতাসহ ব্যাপক সংস্কারের দাবি জানিয়েছে। একইসঙ্গে ক্ষমতাসীন বাথ পার্টির শাসনের অবসান চায় তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সহিংসতা এড়িয়ে চলার আবেদন সত্ত্বেও রাজধানী দামাস্কাসসহ দেশের প্রধান প্রধান শহরে বিক্ষোভাকারীদের ওপর পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী নির্বিচার গুলি চালিয়েছে।
সঠিক তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব না হলেও বিক্ষোভকারী ও মানবাধিকারকর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, এদিন মোট নিহত ব্যক্তির সংখ্যা কমপক্ষে ৮৮ জন। এর মধ্যে ডুমায় ২ জন, হোমসে ১ জন, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ইজরাতে কমপক্ষে ৬ জন এবং মুদামিয়া ও দামাস্কাসের বাইরে বিভিন্ন স্থানে বাকিরা নিহত হয়েছেন।
তবে বিভিন্ন স্থানে যতো সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে তাতে মৃতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে হোয়াইট হাউস এ সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়ন করতে সিরিয়াকে পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সহিংস আচরণ না করতে সিরীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে প্রতিবেশী দেশ ইরানের সহযোগিতা চাওয়ার অভিযোগ করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, নিজ দেশের জনগণের কথা না শুনে, প্রেসিডেন্ট আসাদ বহিরাগতদের দোষারোপ করছেন। অথচ একই সময়ে তিনি জনগণের ওপর নীপিড়ন চালাতে ইরানের সহযোগিতা চাচ্ছেন। ঠিক ইরানের অনুসরণেই তিনি নিষ্ঠুরতা চালাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন ওবামা।
সিরিয়ায় ছয় সপ্তাহ আগে বিক্ষোভ শুরুর পর এ যাবত ২৮০ জন লোক নিহত হয়েছে বলে জানা যায়। এই সপ্তাহে হোমস শহরে এক বিক্ষোভে নিহত হয়েছে ২১ জন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১১