ঢাকা: বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে এমন এক ধরনের কৃত্রিম সিন্যাপস বর্তনী তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন যা মানুষের মস্তিষ্কের কোষের মতোই কাজ করবে। কৃত্রিম মস্তিষ্ক তৈরিতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে মনে করছেন তারা।
সিন্যাপস হচ্ছে মানুষের শরীরের বিভিন্ন সংকেতবাহী স্নায়ুকোষের মধ্যে সংযোগস্থাপনকারী উপাদান। এ সংযোগ এক নিউরন থেকে আরেক নিউরনে বৈদ্যুতিক অথবা রাসায়নিক সংকেত বহনের মাধ্যমে কোনো তথ্য মস্তিষ্কে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে বহন করে নিয়ে যায়।
ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন কালিফোর্নিয়ার ভিটারবি স্কুল অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের দুইজন গবেষক অধ্যাপক অ্যালিস পার্কার এবং চোংয়ু ঝুর নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায় এ সফলতা এসেছে।
মস্তিষ্কের কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে ধারণ করতে এ সমন্বিত বর্তনীতে ন্যানোপ্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানান তারা। গবেষকদের ভাষ্যমতে, বৈদ্যুতিক বর্তনীতে কার্বন ন্যানোটিউব ব্যবহার করা যাবে। যা ধাতব পরিবাহী বা অর্ধপরিবাহীর মতো কাজ করবে।
কার্বন ন্যানোটিউব হচ্ছে কার্বনের একটি বিশেষ আণবিক গঠন যা পেন্সিলের সূচাগ্রের ১০ লক্ষ ভাগের এক ভাগ। পার্কার বলেন, এটা হলো কৃত্রিম মস্তিষ্ক তৈরির প্রক্রিয়ায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে পরবর্তী পদক্ষেপটি আরো জটিল হবে।
মি. পার্কার কৃত্রিম মস্তিষ্ক তৈরির সম্ভাবনা নিয়ে ২০০৬ সালে কাজ শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘এ সার্কিট তৈরির পরে কীভাবে এমন একটি কাঠামো দাঁড় করানো যায় যা মস্তিষ্কের মতোই কাজ করতে সক্ষম, তা নিয়ে আমরা ভাবছি। যেখানে মানুষের মস্তিষ্কে ১০০ বিলিয়ন (১০ হাজার কোটি) নিউরন রয়েছে এবং প্রত্যেক নিউরনে রয়েছে ১০ হাজার সিন্যাপস। ’
পার্কার বলেন, কৃত্রিম মস্তিষ্ক অথবা মস্তিষ্কের একটি কার্যকর অংশ তৈরির সম্ভাবনা এখনো কয়েক দশক দূরে। মানুষের মস্তিষ্ক প্রতিনিয়ত নতুন নতুন নিউরন তৈরি করছে। সেই সঙ্গে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন সংযোগ। কৃত্রিমভাবে তৈরি বর্তনী দিয়ে এই প্রক্রিয়া সৃষ্টি করাটা হবে অবিস্মরণীয় ঘটনা।
পার্কার বলেন, দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মস্তিষ্কের চিকিৎসায় এ প্রযুক্তি কাজে লাগবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১১