ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সবাইকে চমকে দিতে চেয়েছিলেন জার্মানউইংসের কো-পাইলট!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৫
সবাইকে চমকে দিতে চেয়েছিলেন জার্মানউইংসের কো-পাইলট!

ঢাকা: ব্যতিক্রম কিছু ঘটিয়ে সবাইকে চমকে দিতে চেয়েছিলেন জার্মানউইংসের দুর্ঘটনা কবলিত এয়ারবাস এ-৩২০ এর কো-পাইলট আন্দ্রেয়াস লুবিৎজ। এ তথ্য জানার পর প্লেনটি বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় তার সংশ্লিষ্ট থাকার বিষয়টি যেন আরো স্পষ্ট হয়ে ‌উঠেছে তদন্তকারীদের সামনে।



শনিবার (২৮ মার্চ) মারিয়া ডব্লিউ নামের ২৬ বছর বয়সী এক নারীর সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে জার্মানভিত্তিক পত্রিকা বিল্ড। তিনি নিজেকে লুবিৎজের বান্ধবী দাবি করে জানান, ২০১৪ সালে তাদের দু’জনের মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হয়।

সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, যখন দুর্ঘটনার কথা শুনলাম, তখন আমার লুবিৎজের একটা কথাই মনে পড়ছিল। সে বলেছিল, একদিন আমি এমন একটা কিছু করবো, যা সিস্টেম বদলে দেবে। সবাই আমার নাম জানবে ও সারাজীবন মনে রাখবে।

তিনি বলেন, আমি সেসময় বুঝতে পারিনি, কি বোঝাতে চেয়েছিল আন্দ্রেয়াস, কিন্তু এখন বুঝতে পারছি।

গত ২৪ মার্চ ফ্রান্সের আল্পস এলাকায় দেড়শ’ আরোহী নিয়ে বিধ্বস্ত হয় লুফথানসা বিমান সংস্থার অঙ্গপ্রতিষ্ঠান জার্মানউইংয়ের এ-৩২০ প্লেন। নিহত হন এর সব আরোহী।

এরপর ঘটনাস্থল থেকে প্রথম ব্ল্যাকবক্স উদ্ধারের পরই কো-পাইলটের ইচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা ঘটানোর বিষয়টি সামনে চলে আসে। জানা যায়, প্লেনটির মূল পাইলট ককপিটের বাইরে আটকা পড়েছিলেন কোনো কারণে। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি দরজা ভেঙ্গে ককপিটে ঢোকার চেষ্টা করেন।

জানা যায়, বিধ্বস্ত হওয়ার আগে ছয় হাজার ফুট উচ্চতায় থাকা অবস্থায় রাডারের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় প্লেনটির। এরপর এটি ৩৮ হাজার ফুট উপরে ওঠে। তারপরই মাত্র আট মিনিটে খসে পড়ে আল্পসে বিধ্বস্ত হয় এটি। দুই ইঞ্জিনবিশিষ্ট এয়ারবাসটিতে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল না বলেও জানা গেছে।

এমনকি পতনের আট মিনিটে এর কোনো ইঞ্জিন বিকলও হয়নি। প্লেনটি সরাসরি আল্পসে আঘাত হেনে বিধ্বস্ত হয় বলে নিশ্চিত হয়েছেন তদন্তকারীরা।

এদিকে, শুক্রবার (২৭ মার্চ) জার্মান কর্তৃপক্ষ আন্দ্রেয়াস লুবিৎজের একটি সিক-নোট খুঁজে পেয়েছে, যেখানে তিনি তার চোখের সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু জার্মানউইংস এ তথ্য অস্বীকার করে জানিয়েছে, তিনি কোনো সিক-নোট দেননি কর্তৃপক্ষকে।

এর আগে তদন্তকারীরা জানিয়েছিল, লুবিৎজের বাড়িতে অনুসন্ধান করে এমন কিছু ওষুধ পাওয়া গেছে, যা তার মানসিক সমস্যা থাকার বিষয়টি প্রমাণ করে।
শুক্রবার ডুসেলডর্ফ ইউনিভার্সিটি হসপিটাল কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, বিগত দুই মাস ধরে লুবিৎজ তাদের রোগী ছিলেন। তিনি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সর্বশেষ সেখানে যান চলতি মাসের ১০ তারিখে।

এয়ারবাস এ-৩২০ এর কো-পাইলটের বান্ধবীর দেওয়া সাক্ষাৎকার, তার সিক-নোট ও এর সঙ্গে মানসিক বৈকল্যের প্রমাণ তদন্তকারীদের সামনে দেড়শ’ আরোহী নিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত প্লেনটির রহস্য উন্মোচনে বেশ বড়সড় প্রশ্নবোধক চিহ্নই এঁকে দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।