ইসলামাবাদ: লাদেন নিহত হওয়ার পরে এখন বেঁচে আছেন আল কায়দার দ্বিতীয় শীর্ষ নেতা আইমান আল-জাওয়াহিরি। মিশরীয় বংশোদ্ভূত জাওয়াহিরি পেশায় একজন শল্যচিকিৎসক।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার পেন্টাগন ও টুইন টাওয়ারে হামলার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন। লাদেনকে সর্বশেষ দেখা গিয়েছিল ২০০৪ সালে।
তাকে সর্বশেষ ২০০১ এ আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় দেখা যায়। পশ্চিমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে তিনি অনেক ভিডিওবার্তায় বহুবার নিজের উপস্থিতি জানান দিয়েছেন।
৫৯ বছর বয়সী সাবেক এই চোখের ডাক্তারকে ধরিয়ে দেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র আড়াই কোটি মার্কিন ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার এফবিআই জানায়, জাওয়াহিরি লাদেনের ব্যক্তিগত চিকিসক। লাদেনকে যদি আল কায়দার তাত্ত্বিক বলা হয় তবে জাওয়াহিরিকে বলা যায় তার সফল রূপকার।
লাদেনের সঙ্গে জাওয়াহিরির প্রথম দেখা হয় ১৯৮০-এর দশকে, আফগানিস্তানে। ১৯৮০-এর দশকে সোভিয়েত দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে কথিত ‘জিহাদ’ বা ‘পবিত্র যুদ্ধে’ যুক্তরাষ্ট্র মুসলিম বিশ্ব থেকে যে হাজার হাজার যোদ্ধাদের জড়ো করে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল, লাদেনও তাদের মধ্যে ছিলেন। ছিলেন মিশরের ধনাঢ্য পরিবারে বেড়ে ওঠা চিকিৎসক আইমান আল-জাওয়াহিরি। তার বাবাও খুব নামকরা ডাক্তার ছিলেন। তার এক পিতামহ সুন্নি মুসলিমদের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কায়রোর আল আজহার ইনস্টিটিউটের ধর্মীয় নেতা ছিলেন।
খুব তরুণ বয়সেই তিনি মিশরের চরমপন্থী মুসলিম সংগঠনের যুক্ত হন। জাওয়াহিরি ১৫ বছর বয়সে আরব বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো জঙ্গি সংগঠন মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার দায়ে গ্রেপ্তার হন।
তিনি ১৯৭৯ সালে বিয়ে করেন। তিনি অনেক বই লেখেন এবং মুসলিম উগ্রপন্থা নিয়ে পড়াশোনা করেন, যা তার জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পড়ার একটা কারণ।
জঙ্গিবাদের অভিযোগে তিনি মিশরে তিন বছর কারাভোগ করেন। তাকে আনোয়ার সাদাতের হত্যাকারীদের একজন বলেও সন্দেহ করা হয়। মিশরের প্রেসিডেন্ট আনোয়ার সাদাত ১৯৮১ সালে গুপ্তঘাতকদের হাতে নিহত হন। ১৯৯৭ সালে লুক্সর শহরে বিদেশি পর্যটকদের উপর যে গণহত্যা সংঘটিত হয় তাতেও তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন।
মিশরীয় সরকার তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়। এরপর তিনি ১৯৮১ সালে মিশর ছাড়েন। প্রথমে যান সৌদি আরব। এরপর পাকিস্তানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারে যান।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১১