হায়দারাবাদ: ইঁদুর হত্যা করলে অথবা আহত করলে সর্বোচ্চ সাজা ৫ বছর। অধিকন্তু একলাখ রুপি জরিমানা।
অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাক্ট-২০১১ নামের এ আইনটি নিয়ে ভারতে গবেষকরা মহা ক্ষ্যাপা। কারণ এ আইন অনুযায়ী গবেষণায় ব্যবহৃত প্রাণীর প্রতি যথেষ্ট যতœ নেওয়া না হলে গবেষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মধ্যে ইঁদুর, গিনিপিগ, খরগোশ এবং বানর অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
ভারতের মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের অধীনে বায়োমেডিকেল রিসার্চ সেন্টার, ওষুধ কোম্পানি এবং বিশ্ববিদ্যালয়সহ এমন ৫০০টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা পরীক্ষা-নীরিক্ষার জন্য বিভিন্ন প্রাণী ব্যবহার করে।
এই নতুন আইনের নেতিবাচক প্রভাব উপলব্ধি করেই গত ১১ মে ভারতের মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের বিজ্ঞানীদের নিয়ে একটি জরুরি বৈঠকে বসে। পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশের কাছে তাদের একটি প্রস্তাব পেশের কথা রয়েছে।
তবে আপত্তি পেশ করতে তারা অনেক দেরী করে ফেলেছেন। নতুন আইনের ব্যাপারে আপত্তি গ্রহণে শেষ তারিখ ছিল ২০ মার্চ।
ভারতের গবেষকরা এই নতুন আইন নিয়ে বেশ ক্ষুব্ধ। অবশ্য দেশটির পরীক্ষাগারে এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানে নতুন এ আইন সংক্রান্ত কোনো প্রজ্ঞাপন এখনো পৌঁছেনি।
দ্য ন্যাশনাল সেন্টার অব ল্যাবরেটরি অ্যানিমেল সায়েন্স ভারতের একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা দেশটির বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে প্রাণী সরবরাহ করে থাকে।
পরীক্ষার সময় কোনো প্রাণীকে ব্যাথা দিলে তাকে কঠোর শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে। যদিও গবেষণায় সময় ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো প্রাণীকে ব্যাথা দেওয়া হয়না বলে বিজ্ঞানীদের দাবি। এখন ভারতের প্রাণী কল্যাণ বোর্ড যদি মনে করে গবেষণায় প্রাণীকে কষ্ট দেওয়া হচ্ছে তাহলে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানী অথবা পিএইচডি গবেষণারত কোনো ছাত্রের তল্পি গুটিয়ে বাড়িতে বসে থাকতে হবে।
ভারতের অনেক ওষুধ কোম্পানি নতুন ওষুধের কার্যকারীতা পরীক্ষার জন্য প্রাণীর শরীরে প্রথম প্রয়োগ করে। এ আইন হলে তারাও বিপাকে পড়বে। ভারতের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যকাডেমিও এ আইনের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে।
নতুন আইন অনুযায়ী গবেষণাকাজে ব্যবহৃত প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করা হলে সর্বনিম্ন সাজা ২৫ হাজর থেকে ৫০ হাজার রুপি জরিমানা সঙ্গে এক থেকে তিন বছরের কারাদ-। এ কাজ অব্যাহত রাখলে সাজার মেয়াদ বাড়িয়ে দুই থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত হবে। জরিমানার পরিমাণও বেড়ে দাঁড়াবে ৭০ হাজার থেকে এক লাখ রুপি।
বাংলাদেশ সময়: ২২০০ ঘণ্টা, মে ২২, ২০১১