ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

উইকিলিকস

গুয়ান্তানামো বন্দিকে মুক্তি দিতে চাপ দিয়েছিল পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৭ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১১
গুয়ান্তানামো বন্দিকে মুক্তি দিতে চাপ দিয়েছিল পাকিস্তান

ঢাকা: গুয়ান্তানামো বে বন্দি শিবিরে আটক একজন বন্দি যার সঙ্গে আল কায়েদার সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল তাকে দেশে ফিরিয়ে দিতে পাকিস্তানি সরকার সক্রিয়ভাবে তৎপরতা চালিয়েছিল।

সাইফুল্লাহ পারাচা (৩৪) নামে ওই ব্যক্তি একজন ব্যবসায়ী।

ওসামা বিন লাদেনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ট যোগাযোগ ছিল।   আল কায়েদাকে বিস্ফোরক রাসায়নিক এবং অন্যান্য অস্ত্র সরবরাহে জড়িত ছিলেন এবং তাদের আদর্শের প্রচার প্রচারণায় তিনি তার নিজস্ব গণমাধ্যম নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে দিতেন। উইকিলিকসে প্রকাশিত মার্কিন গোপন তারবার্তার পাকিস্তান অংশ থেকে ভারতের দ্য হিন্দু পত্রিকা এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।

তার বার্তায় জানা যায়, সাইফুল্লাহ খুব সম্ভবত গুয়ান্তানামো বে কারাগারে পাকিস্তানি ৬ বন্দির মধ্যে সবচেয়ে বয়স্ক। সর্বশেষ এ ছয় বন্দিকে ছেড়ে দেওয়া বা দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না।

এ তারবার্তাটি ছিল ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাসে ২০০৬ সালের ৩০ আগস্ট সময়কালের। বিস্তারিত বর্ণনায় বলা হয়, একটি পাকিস্তানি প্রতিনিধি দল গুয়ান্তানামো বে বন্দি শিবির পরিদর্শন শেষে এ ধারণা নিয়ে আসেন, এখানকার বেশির ভাগ বন্দিকে আসলে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে ধরে আনা হয়েছে। আর এরা মোটেও হুমকি নয়।

তারবার্তায় এটা স্পষ্ট যে, সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে পাক-মার্কিন সম্পর্ক কতোটা জটিল। আল কায়েদাকে প্রতিহত করতে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে কতো ফারাক।

এতে আরো স্পষ্ট, আল কায়েদার সন্দেহভাজন জঙ্গিদের মূল্যায়নে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাকিস্তানি কমকর্তাদের মধ্যে কতো মতভেদ রয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্র এ সন্দেহভাজনদের আটক করায় দেশের মানুষের ক্রোধ বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তান সরকার দেশের ভেতর থেকেই কতোটা চাপের সম্মুখীন হচ্ছে।

ইসলামাবাদে মার্কিন দূতাবাসের রাজনৈতিক উপদেষ্টাকে পাঠানো তারবার্তার অংশ এটি। তার বার্তায় গুয়ান্তানামো বে বন্দি শিবির পরিদর্শনে যাওয়া প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান ইয়াকুবকে ভুল করে ইমরান ফারুক নামে উল্লেখ করা হয়। ইয়াকুব পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ন্যাশনাল ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সেলের পরিচালক।

বার্তায় উল্লেখ করা হয়, এ বছরে (২০০৬ সাল) আগস্টের প্রথম দিকে পাকিস্তানি পরিদর্শক দল গুয়ান্তানামো বে বন্দি শিবির পরিদর্শন করেছে। এতে তাদের দৃঢ় ধারণা হয়েছে, এখানে বন্দি ছয় পাকিস্তানিকে দেশে ফেরত পাঠাতে কোনো বাধা নেই। এর মধ্যে পারাচাও রয়েছেন। পাকিস্তান সরকার তাকে এনে এখানের কারাগারে রাখার প্রস্তুতি নিয়েছে।

করাচির এ ব্যবসায়ীকে ২০০৩ সালের ৮ জুলাই ব্যাংকক থেকে আটক করা হয়। গুয়ান্তানামো বে তে তাকে স্থানান্তর করা হয় ২০০৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর।

এর আগের বছর তার ছেলে উযাইর পারাচাকে আটক করা হয় যুক্তরাষ্ট্রে। তার বিরুদ্ধে আল কায়েদাকে রসদ সরবরাহের অভিযোগ আনা হয়। ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালতে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন।

গুয়ান্তানামোতে মার্কিন কর্মকর্তারা পাকিস্তানি প্রতিনিধি দলকে নিশ্চিত করেন, পাকিস্তান সরকার যদি পারাচাকে ফিরিয়ে নিতে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানায় তাহলে তারা তা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।

লে. কর্নেল ফারুক মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তাকে জানান, এরকম একটি অনুরোধ জানাতে ইতিমধ্যে তিনি পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি লিখেছেন।

ওই ছয় জন বন্দিসহ আফগানিস্তানে আটক করে গুয়ান্তানামোতে রাখা এমন আরো ২০ জন পাকিস্তানিকে ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাবও তারা দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫১ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।