কায়রো: মিশরীয় খ্রিস্টানদের সঙ্গে একদল বিক্ষুব্ধ লোকের সংঘর্ষে কমপক্ষে দুই জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৬০ জন।
মিশরের দৈনিক আল মাসরি আল ইয়োম জানায়, প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী এ সংঘর্ষে দুইজন খ্রিস্টান বিক্ষোভকারী গুলিবিদ্ধ হন। বিক্ষোভস্থলের নিকটে একটি ব্রিজের ওপর পার্ক করা জিপগাড়ি থেকে গুলি করা হয়। তবে যারা মারা গেছেন তারা গুলিতে আহতরাই কি না তা পরিস্কার নয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে টেলিভিশন ভবনের সামনে অবস্থানরত খ্রিস্টান বিক্ষোভকারীদের ওপর ২০-২৫ জনের একটি দল হামলা করে। সংঘর্ষে পাথর, ককটেল এবং আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হাতেও লাঠি, চেইন এবং পেট্রোল বোমা ছিল বলে তারা জানান।
একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানান, এর আগে বিক্ষোভের স্থান দিয়ে কোনো যান চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছিল না। একটি গাড়ি থামালে চালক তাদের গুলতি মারার চেষ্টা করে। এসময় বিক্ষোভাকরীরা তাকে মাটিতে ফেলে পিটাতে থাকে। এতে স্থানীয় কিছু লোক উত্তেজিত হয়ে উঠে এবং সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
রোববার সকালে সেনা বাহিনী হামলাকারীদের হাত থেকে বাঁচাতে বিক্ষোভকারীদের ঘিরে রাখে। তারা ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে এবং কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কমপক্ষে ১০টি কার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আটক করা হয়েছে ৫০ জনকে।
সংঘর্ষ শুরুর চার ঘণ্টা পর সেনা বাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে পেরেছে বলে টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়।
রউফ নামে একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শনিবার দিনের শুরুতে কয়েক হাজার লোক বিক্ষোভে অংশ নিলেও রাতে বেশিরভাগই চলে যায়। তবে কিছু লোক বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার কথা বলে অবস্থান করলে নিরাপত্তা রক্ষীরা তাদের ঘিরে রাখে।
এদিকে, সিনাই উপদ্বীপে একজন জনপ্রিয় মুসলিম শেখের মাজারে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।
সম্প্রতি মিশরে মুসলিম-খ্রিস্টান সংঘর্ষে ১২ জন নিহত এবং কমপক্ষে ২০০ জন আহত হওয়ার দেশে আন্তঃধর্মীয় উত্তেজনা বেড়েছে।
নজিরবিহীন এক বিপ্লবের পর মিশরে মোবারক শাসনের অবসানের পর দেশে সেনা বাহিনীর নেতৃত্বে মধ্যবর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে। সংবিধান প্রণয়ন এবং সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগেই সাম্প্রতিক এই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা দেশে স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৮ ঘণ্টা, মে ১৫, ২০১১