ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবার মধ্যকার সম্পর্কে যে উষ্ণতা ছড়াচ্ছে তাকে স্বাগত জানিয়েছেন রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। একইসঙ্গে ওয়াশিংটন ও হাভানার মধ্যকার কূটনেতিক সম্পর্ক বিশ্ব পরিমণ্ডলেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
রাশিয়ান প্রেসিডেন্টের দাফতরিক বাসভবন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দমিত্রি পেসকভ বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন।
দমিত্রি পেসকভ বলেন, পুতিন ওয়াশিংটন ও হাভানার মধ্যকার সম্পর্ক পুনর্স্থাপনের প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানিয়েছেন। একইসঙ্গে দু’পক্ষের কূটনেতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক জায়গায় ফিরিয়ে আনার বিষয়ে কিছু ইতিবাচক আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন।
জুনের শেষ দিকে সেন্ট পিটার্সবার্গে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে এ প্রসঙ্গ উঠলে পুতিন এমন মনোভাব প্রকাশ করেন বলে জানান দমিত্রি পেসকভ।
ওই বৈঠকের পর স্প্যানিশ একটি সংবাদমাধ্যম জানায়, রুশ প্রেসিডেন্ট ওয়াশিংটন ও হাভানার সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়ায় সমর্থন দিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন, কিউবার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের আরোপিত অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় দ্বীপ রাষ্ট্রটির সঙ্গে পুরো বিশ্বের সম্পর্কেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। মস্কো লাতিন আমেরিকান দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় বলেও বৈঠকে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন পুতিন।
এদিকে, রাশিয়ার বন্ধু রাষ্ট্র কিউবার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্স্থাপনের বিষয়ে রুশ পার্লামেন্ট স্টেট ডুমা’র স্পিকার সার্জেই নরিশকিন বলেছেন, এ দু’পক্ষে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনর্স্থাপিত হলে মস্কোর সঙ্গে হাভানার সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।
বুধবার (১ জুলাই) কিউবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ২০ জুলাই একসময়ের চিরবৈরী যুক্তরাষ্ট্র ও কিউবা তাদের মধ্যে দূতাবাস চালু করবে। কিউবান প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রোকে দেওয়া এক চিঠিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
কিউবায় সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের পর দেশটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে। স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে দু’দেশের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫৮ সালের পর আর কখনও মুখোমুখি হননি দুই দেশের নেতারা। ১৯৫৯ সালে কিউবার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
১৯৬১ সালে দেশটিতে দূতাবাসও বন্ধ করে দেয় ওয়াশিংটন। এরপর ১৯৮২ সালে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কিউবাকে কালো তালিকাভুক্ত করে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের ‘কালো তালিকা’ভুক্ত হওয়ার কারণে কিউবাকে এতোদিন অর্থনৈতিক ও অস্ত্র রফতানির ওপর বিশ্ব সম্প্রদায়ের নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকতে হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থঋণের বিষয়ে বিভিন্ন বাধার মুখে পড়তে হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলোর এ নিষেধাজ্ঞায় কিউবা এভাবে ভুগলেও দীর্ঘ এ দুঃসময়টায় তাদের পাশেই ছিল রাশিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৯ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০১৫
এইচএ