ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

সৌরজগতের বাইরে প্রথম ‘অরোরা’র সন্ধান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৫
সৌরজগতের বাইরে প্রথম ‘অরোরা’র সন্ধান

ঢাকা: মেরুপ্রভা বা অরোরা মানেই নৈসর্গিক আলোর খেলা। দৃশ্যপটে যখন আলোর এ খেলা ধরা পড়ে, তখন মুগ্ধতা দর্শকের দৃষ্টিকে যেন বন্দি করে ফেলে।

রোমান ঊষাদেবীর নামে প্রাকৃতিক আলোর এই খেলার নাম রেখেছেন বিজ্ঞানীরা ‘অরোরা’। সাধারণত সৌরজগতে, বিশেষ করে পৃথিবীর মেরু এলাকায় অরোরা’র দেখা মিললেও এবার প্রথমবারের মতো সৌরজগতের বাইরে সন্ধান মিলল আলোর এই খেলার।

সৌরজগত থেকে ১৮ আলোকবর্ষ দূরে ‘লিরা’ নক্ষত্রপুঞ্জের এক বামন নক্ষত্রকে ঘিরে এ অরোরা’র দেখা মিলেছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। জার্নাল নেচারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে তারা বলেছেন, এই অরোরা’র উজ্জ্বলতা অনেকটা উত্তরীয় আলোর মতোই মনে হয়েছে। তবে এর প্রকৃত উজ্জ্বলতা কোটি গুণ বেশি ও অনেক বেশি লোহিত হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব শেফিল্ডের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ডক্টর স্টুয়ার্ট লিটলফেয়ার বলেছেন, এই প্রথম আমরা সৌরজগতের বাইরে ও কোনো বাদামী বামন নক্ষত্রকে ঘিরে অরোরা’র দেখা পেয়েছি।

এলএসআরজে১৮৩৫ নামের ওই নক্ষত্রের চারপাশের অরোরা অত্যন্ত লম্বা বিস্তারের বেতার টেলিস্কোপ ও হেল এন্ড কেক অপটিক্যাল টেলিস্কোপের মাধ্যমে বিজ্ঞানীদের চোখে ধরা পড়ে।

পৃথিবীতে দেখা পাওয়া বেশিরভাগ অরোরাই চার্জিত সৌর কণা বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়ায় সৃষ্টি হয়। কিন্তু সৌর জগতের বাইরের ওই আলোকিত বামন নক্ষত্র একদিকে যেমন অন্যান্য নক্ষত্রের তুলনায় অনেক ছোট, অন্যদিকে যেকোনো সাধারণ গ্রহের তুলনায় অনেক বড়। সেই সঙ্গে সূর্যের কাছাকাছি আর কোনো নক্ষত্রই সৌর কণা বিচ্ছুরণ করে না। এ কারণেই এই অরোরা বিজ্ঞানীদের মনে প্রশ্নের সৃষ্টি করেছে।

ডক্টর স্টুয়ার্ট লিটলফেয়ার জানিয়েছেন, পৃথিবীর অরোরা সবুজ হয়ে থাকে, কারণ এখানে চার্জিত সৌর কণা, তথা ইলেক্ট্রন বায়ুমণ্ডলের অক্সিজেন পরমাণুকে আঘাত করে। কিন্তু এলএসআরজে১৮৩৫ এর ক্ষেত্রে চার্জিত কণা সেখানকার বায়ুমণ্ডলের হাইড্রোজেন কণাকে আঘাত করছে। এ কারণে ওই অরোরা’র রঙ লাল।

এলএসআরজে১৮৩৫ পূর্ণাঙ্গ নক্ষত্র না হওয়ায় অরোরা সৃষ্টির কারণ সম্পর্কে ধন্দে পড়ে গেছেন বিজ্ঞানীরা। বিভিন্ন সম্ভাব্য উত্তর পাওয়া গেলেও একটা উত্তরই সবচেয়ে যৌক্তিক বলে মনে করছেন তারা। বামন নক্ষত্রটিকে ঘিরে হয়তো কোনো গ্রহ বা চাঁদ থাকতে পারে, যার সন্ধান এখনও মেলেনি। আর এই গ্রহ বা চাঁদই নক্ষত্রটির দিকে কণা ছুড়ে দিচ্ছে, যার ফলে অরোরা’র সৃষ্টি হয়েছে সেখানে।

উদাহরণ হাজির করে এই উত্তরের স্বপক্ষে যুক্তিও দাঁড় করিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। সৌর জগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতির চাঁদ আইও’য় এমন অনেক আগ্নেয়গিরি রয়েছে, যেখান থেকে চার্জিত কণা নির্গত হয়। আর এভাবেই বৃহস্পতিতে অরোরা’র সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০১৫
আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।