ইসলামাবাদ: যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, পাকিস্তানের বুঝা উচিত শুধু আমেরিকার বিরোধীতা এবং ষড়যন্ত্র তত্ত্ব তাদের সমস্যার সমাধান করবে না। শুক্রবার পাকিস্তানে এক আকস্মিক সফরে এসে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলার সময় হিলারির সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন, তার সফরসঙ্গি জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান অ্যাডমিরাল মাইক ম্যুলেন, পাকিস্তানের সামরিক এবং রাজনৈতিক নেতারা।
২ মে অ্যাবোটাবাদে গোপন অভিযানে আল কায়েদা প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যার পর যুক্তরাষ্ট্র-পাকিস্তান সম্পর্কের অবনতি ঘটলে এটাই হিলারির প্রথম ইসলামাবাদ সফর।
সাংবাদিকদের ক্লিনটন বলেন, ওসামা বিন লাদেনের আত্মগোপনের খবর পাকিস্তান সরকার জানত তার কোনো প্রমাণ নেই। তিনি বলেন, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা বলেছেন পাকিস্তানে লুকিয়ে থাকতে কেউ কোথাও থেকে বিন লাদেনকে সাহায্য-সহযোগিতা করছিল।
এ সফরকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ঘটনার মোড় ঘুরে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিতে উপনীত হয়েছি। ওসামা বিন লাদেন নিহত হয়েছে কিন্তু আল কায়েদা ও তার সন্ত্রাসী চক্র এখনো আমাদের উভয়ের জন্য মারাত্মক হুমকি। ’
আফগানিস্তানে রাজনৈতিক সমঝোতার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু পাকিস্তানের নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে জঙ্গিরা এখনো তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে তিনি এও বলেন যে, তিনি বিশ্বাস করেন পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য অভিন্ন। পাকিস্তানের সমস্যা যুক্তরাষ্ট্র সমাধান করতে পারবে না আর করা উচিতও নয়। এটা সম্পূর্ণই পাকিস্তানের ব্যাপার বলে মন্তব্য করেন ক্লিনটন।
আফগানিস্তানে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করতে পাকিস্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে পাকিস্তানের মতো এতো উচ্চ মূল্য আর কোনো জাতি দেয়নি- ঊর্ধ্বতন মার্কিন কূটনীতিকরা এ কথা বললেও ক্লিনটন বলেন, ‘এর জন্যে আরো অনেক কিছু আমাদের উভয়কেই করতে হবে এবং জরুরি ভিত্তিতে। ’
বিন লাদেন হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের এক তরফা অভিযানে পাকিস্তান ক্ষুব্ধ এবং পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার বৈঠকে বেশ উত্তেজনা ছিল এমন খবর প্রত্যাখ্যান করেছেন হিলারি। তিনি বলেন, আমি শুনেছি তারা আরো সুনির্দিষ্ট কার্যক্রম শুরুর অঙ্গীকার করেছেন। সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাকিস্তান আরো বেশি বাহবা পাওয়ার যোগ্য বলে মনে করেন তিনি।
পারস্পরিক সম্পর্কের ব্যাপারে আরো বেশি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েই তিনি ওয়াশিংটনে ফিরবেন বলে জানান।
অপরদিকে, হিলারির সঙ্গে সফরে আসা অন্য মার্কিন কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এখন তাদের (পাকিস্তান) সামনে কঠিনতর কিছু প্রশ্ন থেকে গেল যা এর আগে তারা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল অথবা অসঙ্গলগ্ন উত্তর দিয়েছিল। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৪ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১১