মস্কো: লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে ন্যাটোর বিমান থেকে নতুন করে সিরিজ হামলা চালানো হয়েছে। শনিবার রাতভর এ হামলা জোরদার করার আগে আগে ব্রিটেনের অ্যাপাচি হেলিকপ্টার অভিযানে যোগ দিয়েছে।
এদিকে, লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফির ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর ব্যাপারে রাশিয়া মধ্যস্থতা করবে বলে জানা গেছে।
গত বৃহস্পতিবার গাদ্দাফির প্রধানমন্ত্রী বাগদাদি আল-মাহমুদি মস্কোয় একটি জরুরি টেলিফোন করেন। এতে তিনি কয়েকমাস ধরা চলা লড়াইয়ে অস্ত্রবিরতির জন্য গাদ্দাফি প্রস্তুত বলে জানান। আর এতে রাশিয়ার মধ্যস্থতা প্রয়োজনা বলেও তিনি মন্তব্য করেন। একইদিন ফ্রান্সের প্রমোদনগরী দ্যুভিলে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নিকোলা সারকোজি ও যুক্তরাষ্ট্রের বারাক ওবামা রাশিয়ার দিমিত্রি মেদভেদেভকে একই আহ্বান জানান। পশ্চিমারা আশা করেন, গাদ্দাফির ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানো ত্বরান্বিত হবে এবং তাদের যুদ্ধও অল্প সময়ে শেষ হবে।
মেদভেদেভ হঠাৎ করেই লিবিয়া সংকট নিরসনে চালকের আসনে চলে এসেছেন। টাইম সাময়িকীর একটি প্রতিবেদনে প্রশ্ন রাখা হয়েছে, তিনি কি এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারবেন?
এর উত্তর, হতে পারে। তবে বিশ্বের সব শক্তিধর দেশগুলোকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রাশিয়া লিবিয়ার নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। তারা লিবিয়ার খোঁজখবরও রাখে নিয়মিত। গত মার্চে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের লিবিয়ার অভিযানসংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকে। আর দুই সপ্তাহে গাদ্দাফিবিরোধী ও গাদ্দাফির অনুগত বাহিনী উভয় পক্ষের সঙ্গেই রাশিয়া বৈঠক করেছে। উভয় পক্ষই রাশিয়ার কাছে উন্মুক্ত সংলাপের আয়োজন করে। সংকট নিরসনে এ অর্জন পশ্চিমারা কোনোভাবেই দাবি করতে পারবে না।
বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলোর জোট জি-৮ গত ফ্রান্সে তাদের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেয়। এতে মেদভেদেভের সঙ্গে একান্ত বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা রাশিয়ার ভারসাম্যপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। রাশিয়ার দৈনিকে মস্কোর কূটনীতিকের বক্তব্য দিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘ওবামা স্বীকার করে বলেন, গাদ্দাফি ও তার সহযোগীদের সঙ্গে পশ্চিমাদের যোগাযোগ নেই। আর তিনি একইসঙ্গে লিবিয়ার নেতার সঙ্গে আলোচনা স্থাপনে রাশিয়াকে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করার অনুরোধ করেন। ’
তবে গত বৃহস্পতিবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মাহমুদির টেলিফোন আলাপে জানা গেছে, বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার ব্যাপারে গাদ্দাফির সরকার প্রস্তুত এবং বেপরোয়াও বটে। যুদ্ধ শুরুর পর প্রথমবারের মতো গাদ্দাফির সরকার এটা জানালো। এর একদিন পর শুক্রবার রাশিয়ার সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ পশ্চিমাদের সুরে গলা মিলিয়ে জানান, গাদ্দাফিকে অবশ্যই যেতে হবে।
রিয়াবকভ দ্যুভিলে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কর্নেল গাদ্দাফি তার বৈধতা হারিয়েছেন। ক্ষমতা থেকে তার সরে দাঁড়াতে আমাদের তাকে সহায়তা করা উচিৎ। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩২৫ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১১