ঢাকা: তিন বছর আগে রায়গড়ে খুন হন শিনা বোরা। দেহে আগুন ধরিয়ে মাটি চাপা দেওয়া হয় তাকে।
শনিবার (২৯ আগস্ট) স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, মামলার প্রধান অভিযুক্ত ইন্দ্রানী মুখার্জিই যে শিনাকে হত্যা করেছিলেন, সে ব্যাপারে আরও তথ্য পেয়েছেন পুলিশ। ইন্দ্রানীর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জিব খান্না শুক্রবার রাতে পুলিশের এক যৌথ জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সেই সঙ্গে এ খুনের ঘটনায় ব্যবহার হওয়া একটি গাড়িও উদ্ধারের দাবি করেছে পুলিশ।
খবরে আরও জানানো হয়েছে, তদন্তে আরও অগ্রগতির জন্য ইন্দ্রানীকে খার পুলিশ স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত ২৫ আগস্ট তাকে আটক করা হয়।
হত্যা মামলায় সংশ্লিষ্ট থাকার দায়ে একইদিন ইন্দ্রানীর গাড়িচালক শ্যাম রাইকেও আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে শ্যাম রাই স্বীকার করেছেন, শিনাকে হত্যার পর রায়গড়ের একটি জঙ্গলে মরদেহ সৎকারে তিনি ইন্দ্রানীকে সহায়তা করেন।
২০১২ সালের ২৪ এপ্রিল হত্যা করা হয় শিনা বোরাকে। তিনি ছিলেন ইন্দ্রানী মুখার্জির প্রথমপক্ষের মেয়ে। ওই বছরই রায়গড় পুলিশ জঙ্গল থেকে কিছু হাড়গোড় ও দেহাংশ উদ্ধার করে জেজে হাসপাতালে জমা দেয়। তবে তখন কেউ ধারণা করেনি, এ দেহাংশ শিনার হতে পারে।
এখন পুলিশ উদ্ধার ওই দেহাংশের ফরেনসিক রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে। চালক ও সঞ্জিবের জবানবন্দিতে ওগুলো শিনারই বলে সন্দেহ ঘণীভূত হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে জেজে হাসপাতাল উদ্ধার দেহাংশের কয়েকটি হাড় খার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
এদিকে, ইন্দ্রানী মুখার্জির ছেলে মিখাইল বোরা এ মামলায় যেন ঘি ঢেলে দিয়েছেন। বোন শিনা হত্যায় তিনি সরাসরি তার মাকেই দায়ী করেছেন। শুধু তাই নয়, ইন্দ্রানী তাকেও হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
পুলিশি জেরায় তিনি দাবি করেছেন, ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেয়ে পালিয়েছিলেন বলেই বেঁচে গেছেন তিনি।
মিখাইল বলেছেন, শিনা নিখোঁজ হওয়ার কয়েকদিন আগে রাহুল মুখোপাধ্যায় নামে একজনের সঙ্গে শিনার সম্পর্ক ও বিষয়সম্পত্তি নিয়ে আলোচনা করতে তাকে ফোন করে মুম্বাই ডেকে এনেছিলেন মা। তার শরবতে ঘুমের ওষুধ জাতীয় কিছু একটা মিশিয়ে দেওয়া হয়। যে সময়টায় তিনি মুম্বাই আসেন, সেসময় ইন্দ্রানীর স্বামী, স্টার ইন্ডিয়ার প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী (সিইও) পিটার মুখোপাধ্যায় বিদেশে ছিলেন।
তিনি জানান, শরবতে চুমুক দিতেই মাথা ঝিমঝিম করতে থাকে তার। এর মধ্যে শিনাকে নিয়ে আসার নাম করে সঞ্জিব খান্না ও ইন্দ্রানী ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান। এই সুযোগে সেখান থেকে পালান মিখাইল।
শিনা হত্যা মামলার তদন্তকারী এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বান্দ্রার একটি নামী শোরুম থেকে বিয়ের আংটি কিনতে যাওয়ার নাম করে শিনাকে গাড়িতে তোলেন ইন্দ্রানী ও সঞ্জিব। এরপর গাড়ির মধ্যেই তাঁকে পানীয় খেতে দিলে, জ্ঞান হারান শিনা। এর পর অচেতন অবস্থায় তাকে নিয়ে ফ্ল্যাটে ফেরেন তারা। কিন্তু সেখানে তাঁরা মিখাইলকে খুঁজে পাননি।
পুলিশ এখন ধারণা করছে, বিষয়সম্পত্তি সংক্রান্ত জটিলতার জেরেই খুন হতে হয়েছে শিনাকে। তারওপর সবাই শিনাকে ইন্দ্রনীর বোন বলে জানতো। প্রকৃত পরিচয় ফাঁস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকেও খুন করা হয়ে থাকতে পারে তাকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২৯, ২০১৫
আরএইচ