গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতির আটদিন পর হামলা চালিয়ে নারী-শিশুসহ ১১ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। নিহদের মধ্যে রয়েছেন সাত শিশু ও তিন নারী, তারা সবাই একই পরিবারের।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় গাজার জায়তুন পাড়ায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সিভিল ডিফেন্সের বরাতে জানা গেছে, ইসরায়েলি বাহিনীর ট্যাংক থেকে ছোড়া একটি গোলা আবু শাবান পরিবারকে বহনকারী বেসামরিক গাড়িতে আঘাত হানে।
সংস্থাটির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, পরিবারটি তাদের বিধ্বস্ত ঘরবাড়ি দেখতে যাচ্ছিল। তখনই ইসরায়েলি বাহিনী তাদের লক্ষ্য করে গোলা ছোড়ে। তাদের সতর্ক করা যেত, ভিন্নভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল। এ ঘটনায় আবারও প্রমাণিত হলো, দখলদার বাহিনী এখনো রক্তের তৃষ্ণায় পিপাসিত। নিরীহ বেসামরিকদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালানো তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
হামাস এ ঘটনাকে ‘নৃশংস গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সংস্থাটি জানায়, আবু শাবান পরিবারকে ‘অকারণ ও অন্যায়ভাবে’ টার্গেট করা হয়েছে। হামাস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চলার জন্য চাপ প্রয়োগ করে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার সময় ইসরায়েলি সেনারা গুলি চালায় সেইসব বেসামরিক নাগরিকের ওপর, যারা তথাকথিত ‘হলুদ রেখা’ অতিক্রম করেছিল। এই সীমারেখা অনুযায়ী ইসরায়েলি বাহিনীকে যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে পিছু হটার কথা ছিল।
গাজা সিটি থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক হিন্দ খুদারি জানিয়েছেন, অনেক ফিলিস্তিনি এখনো ইন্টারনেট সংযোগবিহীন অবস্থায় রয়েছেন, ফলে তারা বুঝতে পারছেন না ইসরায়েলি বাহিনী কোথায় অবস্থান করছে। এ পরিস্থিতি ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রাণঘাতী ঝুঁকি তৈরি করছে। বর্তমানে গাজার প্রায় ৫৩ শতাংশ এলাকার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে ইসরায়েলি সেনারা।
এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ জানিয়েছেন, গাজার হলুদ রেখাগুলো শিগগিরই চিহ্নিত করা হবে।
যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী বন্দি বিনিময় কার্যক্রম চললেও ইসরায়েলি বাহিনী এর মধ্যে অন্তত ২৮ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং খাদ্য ও চিকিৎসাসহ মানবিক সহায়তার প্রবেশ কঠোরভাবে সীমিত করে রেখেছে। এর আগে গত সপ্তাহে ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটির শুজাইয়া এলাকায় পাঁচ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছিল।
হামাস জানিয়েছে, তারা এখনো যুদ্ধবিরতির শর্ত মেনে চলছে, যার মধ্যে গাজায় ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা ইসরায়েলি বন্দিদের মরদেহ ফেরত দেওয়ার বিষয়ও রয়েছে।
এমজে