ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

লাল রংয়ের প্রতি মানুষের প্রতিক্রিয়া অনেক ক্ষিপ্র, অনেক প্রবল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৮ ঘণ্টা, জুন ৩, ২০১১
লাল রংয়ের প্রতি মানুষের প্রতিক্রিয়া অনেক ক্ষিপ্র, অনেক প্রবল

ঢাকা: বিপ্লবের রং লাল। লাল কাপড় দেখলে নাকি ষাঁড় উত্তেজিত হয়।

এমন ধারণা বহুদিন থেকেই প্রচলিত। যদিও গরু আসলে বর্ণান্ধ। কিন্তু লাল রং আসলেই যে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী। এ রং মানুষকে সহজেই ক্ষেপিয়ে তুলতে পারে এমন প্রমাণ মিলেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়।

যুক্তরাষ্ট্রের রচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু এলিয়ট যিনি এ গবেষণার একজন সহলেখক জানান, লাল রং আমাদের শারীরিক প্রতিক্রিয়াগুলো বাড়িয়ে দেয় কারণ একে ‘বিপদ সংকেত’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

তিনি বলেন, মানুষ যখন রাগান্বিত হয় অথবা কাউকে আক্রমণের জন্য প্রস্তুত হয় তখন তার মুখম-লে রক্তিমাভা দেখা দেয়। মানুষ এই ধরনের আরক্তিম অবস্থা এবং এর গুরুত্বের ব্যাপারে অত্যন্ত সজাগ থাকে।

লাল রংয়ের এই উত্তেজক কার্যকারীতা খেলাধুলা বা অন্যান্য কর্মকা-ে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে ওই খেলা বা কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির মধ্যে গতি সঞ্চার হবে। তবে গবেষকরা সতর্ক করেছেন, এ উত্তেজনা থেকে পাওয়া শক্তি খুব সময়ের মধ্যেই নিঃশেষ হয়ে যাবে।

এলিয়টের সহ-গবেষক নেদারল্যান্ডের উট্রেকট বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক হেঙ্ক আর্তস বলেন, তবে এই সতর্কতা দুই ধার বিশিষ্ট তলোয়ারের মতো। অতিরিক্ত শক্তি সঞ্চয়ের পাশাপাশি কাজে বিচ্যুতি এবং আত্মনিয়ন্ত্রণের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, কোনো মানুষ যখন লাল রং দেখে তখন তার প্রতিক্রিয়াগুলো খুব দ্রুত এবং প্রবল ভাবে প্রকাশ পায়। অবশ্য মানুষ রংয়ের এই উত্তেজক কার্যকারীতার ব্যাপারে সজাগ নয়।
 
ইমোশন নামে একটি সাময়িকীতে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।

রং নিয়ে আগের এক গবেষণায় দেখা যায়, দক্ষতার সঙ্গে মানসিক এবং যান্ত্রীক কাজ সম্পাদনে লাল রং নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। যেমন, প্রতিযোগী দুই খেলোয়ারের মধ্যে একজন লাল পোশাক পরে থাকলে অপর জনের হেরে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। একই ভাবে পরীক্ষার আগে লাল রং দেখলে কোনো ছাত্র পরীক্ষায় খারাপ ফল করে।

এই পর্যবেক্ষণটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দু’টি পরীক্ষার মাধ্যমে করা হয়েছে। প্রথমে ৪র্থ থেকে দশম গ্রেডের ৩০ জন শিক্ষার্থীকে বেছে নেওয়া হয়। তাদের শক্তভাবে চেপে ধরা হয় যাতে একটু ব্যাথা পায় এবং সেই সঙ্গে লোহার একটি খিল দৃঢ়ভাবে ধরতে বলা হয়। এর ঠিক আগেই লাল অথবা ধুসর চক দিয়ে লেখা পরীক্ষায় অংশগ্রণকারীদের নম্বর উচ্চস্বরে পড়তে বলা হয়।

দ্বিতীয় ধাপে ৪৬ জন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নেওয়া হয়। এর পর এক হাত দিয়ে আরেক হাত যতো জোরে সম্ভব চেপে ধরতে বলা হয়। এ সময় কম্পিউটার মনিটরে লাল, নীল অথবা ধুসর রং এ লেখা একটি শব্দ পড়তে বলা হয়।

এ দুটি পরীক্ষাতেই দেখা গেছে লাল অংশ পড়ার সময় বল প্রয়োগের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়।

বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, জুন ০৩, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।