বেইজিং: চীনের একদল বিজ্ঞানী জিনগত পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে কিছু দুধ উৎপাদনকারী গাভীর জন্ম দিয়েছেন যা মায়ের দুধের অনুরুপ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ দুধ উৎপাদন করবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে এ দুধের বাণিজ্যিক উৎপাদন সম্ভব হবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা।
এই ট্রান্সজেনিক গাভী যে দুধ দেবে তা মাতৃদুগ্ধের মতোই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং ব্যাক্টেরিয়া প্রতিরোধী গুণসম্পন্ন। বেইজিং এর অ্যাগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা এ সফলতা অর্জন করেছেন বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে জানা গেছে।
গরুর ক্লোন করা ভ্রুণের মধ্যে মানুষের জিন সংস্থাপন করে সেই ভ্রুণ পরে অন্য একটি সারোগেট (প্রতিভু) গাভীর জরায়ুতে স্থাপন করা হয়। এভাবে ৩০০টি ট্রান্সজেনিক গাভীর জন্ম দেওয়া হয়েছে। এ কাজে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তা ক্লোন ভেড়া ডলি সৃষ্টিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তির অনুরুপ।
প্রথম কোনো স্তন্যপায়ী প্রাণীর সফল ক্লোন এই ডলি নামের ভেড়াটির জন্ম হয় স্কটল্যান্ডে ১৯৯৬ সালে ৫ জুলাই । ডলি মারা যায় ২০০৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি।
এই গাভীরগুলো থেকে উৎপাদিত দুধে স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়টি পরীক্ষা করা হচ্ছে। সরকার অনুমতি দিলে খুব শিগগিরই এ দুধ বাজারে আসবে। আর এটি সাধারণ গরুর দুধের চেয়ে অনেক বেশি পুষ্টিকর বলে জানানো হচ্ছে।
ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুগ্ধখামার ইতিমধ্যে এ দুধ পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে দেখেছে। স্কাই নিউজকে তারা জানিয়েছে, এ দুধ অনেক বেশি মিষ্টি এবং গবাদি পশুর দুধের চাইয়ে অনেক বেশি পুষ্টিগুণ সম্পন্ন।
প্রসঙ্গত বিজ্ঞানীরা আরো কিছু পশু প্রজাতি সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছেন। যেগুলোর মধ্যে ম্যাডকাউ রোগ প্রতিরোধী, মাংস উৎপাদনকারী এবং জীনগত পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে অনেক বেশি পুষ্টিমান সমৃদ্ধ মাংস উৎপাদনকারী পশু প্রজাতিও রয়েছে।
প্রকল্পের পরিচালক অধ্যাপক লি নিং বলেন, এর মাধ্যমে জীনগত পরিবর্তন সাধনের ব্যাপারে পশ্চিমের যে নৈতিক উদ্বেগ তা ভুল প্রমাণিত হলো।
তিনি বলেন, ‘বিশ্বে ১৫ কোটি মানুষ ন্যূনতম প্রয়োজনী খাবার পায় না। এই দুরাবস্থা দূর করতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন সাধন করা আমাদের দায়িত্ব। আদর্শের কচকচানি ও পারস্পরিক দোষারোপ বাদ দিয়ে সবার আগে মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়া জরুরি। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, জুন ০৮, ২০১১