টোকিও: এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপানে সাম্প্রতিক সুনামির পরে আত্মহত্যার মাত্রা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। গত দুই বছরের মধ্যে এ বছরের মে তে এ সংখ্যা সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে দেশটির সরকারি কর্তৃপক্ষ।
জাপানের জাতীয় পুলিশ সংস্থা জানিয়েছে, এ বছরের মে তে আত্মহত্যার সংখ্যা ৩ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। মাসিক হারে এ সংখ্যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
পুলিশের প্রতিবেদনে আরো জানা যায়, ২০১১ সালের মে মাসে জাপানে মোট আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে ৩ হাজার ২৮১টি। এ সংখ্যা গত বছর একই মাসে সংঘটিত আত্মহত্যার সংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ বেশি।
গত বছরের শেষ নাগাদ জাপান সরকার আত্মহত্যা রোধে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানাভাবে প্রচারাভিযান চালিয়েছিল। এতে কাজও হয়েছিল। কিন্তু মে মাসের এ তথ্য আবার বিপরীতমুখী প্রবণতার দিকে ইঙ্গিত করছে।
গত মার্চে বিধ্বংসী ভূমিকম্প এবং ভয়াবহ সুনামিতে জাপান বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে সুনামিতে ফুকুশিমা পরমাণু শক্তিকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেখান থেকে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ায় দেশটি বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে।
এবারের তথ্যে জানা যাচ্ছে, এ প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরবর্তী দুই মাসে জাপানে আত্মহত্যার মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে।
পুলিশ সংস্থা জানিয়েছে, জাপানের সবচেয়ে ঘনবসতি অঞ্চল টোকিওতে আত্মহত্যার মাত্রা বেশি। শুধু মে মাসে এখানে ৩২৫টি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে।
সবচেয়ে বেশি তেজস্ক্রিয় হুমকির মধ্যে নিপতিত ফুকুশিমাতে মে তে আত্মহত্যা করেছে ৬৮ জন। এ সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৯ বেশি।
তবে সুনামিতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মিয়াগিতে আত্মহত্যার সংখ্যায় কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়নি। অপরদিকে আইওয়াতে এ সংখ্যা আগের বারের চেয়ে ৩ কমেছে।
সম্পূর্ণ জাপানের ক্ষেত্রে হিসাব করলে দেশটির উত্তরাঞ্চল যা সুনামিতে আক্রান্ত হয়েছিল সে অঞ্চলে গত বছর আত্মহত্যার মাত্রা ছিল সবচেয়ে বেশি।
২০১০ সালে আইওয়াতে আত্মহত্যার হার ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। অপর দিকে ফুকুশিমা এবং মিয়াগিতে গত বছর আত্মহত্যার হার ছিল টোকিওর চেয়ে বেশি।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর মধ্যে উচ্চ আত্মহত্যার হারের মধ্যে জাপান অন্যতম।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১১