ঢাকা, শনিবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইয়েমেনে গোপন বিমান হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৭ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১১
ইয়েমেনে গোপন বিমান হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ওয়াশিংটন: ইয়েমেনে গোপন বিমান হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সম্প্রতি দেশটিতে রাজনৈতকি অস্থিতিশীলতা এবং নেতৃত্বশূন্যতার সুযোগে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্রবাহী চালকবিহীন বিমান ও জেট বিমান দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিরোধীদের পক্ষ থেকে সহিংস প্রতিরোধের মাত্রা বেড়ে গেলে যুক্তরাষ্ট্র এই অভিযান শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে বন্ধুরাষ্ট্র ইয়েমের সরকার বিরোধী সশস্ত্রগ্রুপের সঙ্গে যুদ্ধে ব্যতিব্যস্ত  হয়ে পড়েছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার।

সরকারি বাহিনী আগে দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে আল কায়েদা ঘনিষ্ঠ জঙ্গিগ্রুপের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত ছিল। কিন্তু এখন সে সংঘর্ষ রাজধানীতে সানাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। তাই এ মুহূর্তে ইয়েমেনে জঙ্গিদের রাষ্ট্রক্ষমতা হস্তগত করা রুখতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক তৎপরতা গতিশীল করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের এক প্রতিনিধি মনে করেন, অনেকগুলো উপায়ের মধ্যে এটি একটি। এই অভিযানের ফলে জঙ্গিদের শক্তি ক্রমশই কমে যাবে।  

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের জেট বিমান আল কায়েদার মধ্যম সারির নেতা আলি আল হারিথিকে হত্যা করে। ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলে এ হামলায় সন্দেহভাজন আরো কয়েক জঙ্গি নিহত হয়েছে।

তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে চার জন বেসামরিক লোক রয়েছেন।

এক সপ্তাহ আগে আমেরিকান বংশোদ্ভুত ধর্মীয় নেতা আনোয়ার আল আওলাকিকে লক্ষ্য করে চালক বিহীন বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে আওলাকি বেঁচে যান। এ ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্র এক বছর আগে থেকেই হত্যার চেষ্টা করে আসছে।

এ গোপন অভিযান প্রায় এক বছর বিরতির পর সম্প্রতি আবার শুরু করল যুক্তরাষ্ট্র। দুর্বল গোয়েন্দা তথ্যের কারণে বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার আশঙ্কায় এতোদিন অভিযান বন্ধ রাখা হয়েছিল।

ওয়াশিংটনে একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমেরিকান ও সৌদি গুপ্তচরেরা জঙ্গিদের সম্ভাব্য অবস্থান সম্পর্কে অনেক তথ্য পাচ্ছিলেন। কিন্তু ইয়েমেনে শুরু হওয়া সহিংসতা নতুন করে আবার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। বিদ্রোহীদের মধ্যে এক গ্রুপ তার প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপের বিরুদ্ধে তথ্য দিতে পারে। এতে করে অভিযান ভুলভাবে পরিচালিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেন্টাগনের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বুধবার জানান, ইয়েমেনে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা আরো জটিল হয়ে পড়েছে। বিদ্রোহী এবং সরকারবিরোধী জঙ্গিদের সঙ্গে আল কায়েদা জঙ্গিরা মিশে যাচ্ছে। এতে করে তাদের সনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ছে।
 
যুক্তরাষ্ট্রের এ গোপন ইয়েমেন অভিযানের নেতৃত্ব দিচ্ছে  পেন্টাগনের জয়েন্ট স্পেশাল অপারেশনস কমান্ড। এরা আবার গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএ’র সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করে কাজ করছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ অভিযানের প্রতি ইয়েমেনী জনগণের সমর্থন স্থায়ী হবে না যদি ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আলী আবদুল্লাহ সালেহর পতন ঘটে। সম্প্রতি ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জেরাল্ড এম ফিয়ারস্টেইন এ অভিযানের বিষয়টি নিয়ে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।
 
ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা বলেছেন, ওই সাক্ষাতে বিরোধী নেতারা রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, ক্ষমতার দ্বন্দ্বে যে পক্ষই জিতুক যুক্তরাষ্ট্র আল কায়েদার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২৯২৯ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।