টোকিও: পারমাণু শক্তিবিরোধী কয়েক হাজার প্রতিবাদকারী শনিবার জাপানের রাস্তায় বিক্ষোভ র্যালি করেছে। জাপানে ব্যাপক বিধ্বংসী ভূমিকম্প ও সুনামির তিনমাস পর এই প্রথম জনগণ পরমাণু শক্তি ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে আসলো।
ভূমিকম্পের তিনমাস পূর্তি এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরমাণবিক চুল্লি থেকে নির্গত তেজস্ত্রিয়তার ঝুঁকি এ দু’টি বিষয় সামনে রেখে এ র্যালির আয়োজন করা হয়। র্যালি থেকে সরকারের প্রতি পারমাণবিক শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর আহ্বান জানানো হয়।
শ্রমিক, ছাত্র এবং বাবা-মারা তাদের শিশু সন্তানসহ কয়েক হাজার মানুষ এদিন জাপান জুড়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এসময় তারা ‘আর নয় পরমাণু বোমা’, ‘আর নয় ফুকুশিমা’ লিখিত প্ল্যাকার্ড বহন করে। ক্ষুব্ধ প্রতিবাদকারীরা ‘টেপকো মিথ্যাবাদী’ এবং ‘আমাদের বন্ধুদের ফিরিয়ে দাও’ বলে চিৎকার করতে থাকে।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন মা ইউ মাতসুদা বলেন, ‘আমি চাই আমার সন্তান নিরাপদে বাইরে খেলুক, নির্বিঘেœ সাঁতার কাটুক আমাদের সমুদ্রে। ’
জুন মিয়াকাওয়া নামের একজন শ্রমিক বলেন, ‘কোন রাজনৈতিক দল তুমি সমর্থন করো এটা কোনো ব্যাপার নয়। ফুকুশিমা এখনও তেজস্ক্রিয়তা ছড়াচ্ছে। লড়াই নয়, সকল রাজনৈতিক দলের উচিত এই সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসা। ’
এসময় তিনি তার মাথা থেকে টুপি খুলে বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানান।
জনগণের এ বিক্ষোভ জাপানে পরমাণ চুল্লিগুলো বন্ধ করতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে আরেকটু বেশি চাপের মধ্যে ফেললো। এর আগে মে তে হামোকা পরমাণু কেন্ত্র বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। সেই সঙ্গে জনগণের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিধান না হওয়া পর্যন্ত নিয়মিত পরীক্ষার জন্য বন্ধ রাখা দেশের অন্য চুল্লীগুলো চালুর ক্ষেত্রেও সতর্কতা স্বরুপ আরো বেশি সময় নেবে সরকার।
সুনামিতে ফুকুশিমা পরমাণু কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর বর্তমানে জাপানে ৫৪টি পারমাণবিক চুল্লির মধ্যে মাত্র ১৯টি চালু রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবগুলো পারমাণু চুল্লি পুনরায় চালু করা জাপানের পক্ষে কষ্টসাধ্য। এতে দেশটির অর্থনৈতিক ঝুঁকির মধ্যে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১১