নয়াদিল্লি: প্রথম পুত্র সন্তানের জন্মের পর আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলেন মা অম্রিতা সাক্সেনা (৩৮)। তবে তার এ উচ্ছ্বাস হঠাৎই বিষাদে পরিণত হয় যখন তিনি দেখলেন তার সোনামনিটি জন্মেছে ৩৪টি আঙ্গুল নিয়ে।
এ হলো ভারতের ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেসে (এআইআ্ইএমএস) সম্প্রতি অস্ত্রপচারের জন্য আসা এক তরুণ দম্পতির প্রথম সন্তানের ঘটনা।
মা অম্রিতা জানান, তাদের প্রথম সন্তান ‘অক্ষত’ জন্ম নেয় গত মার্চে। জন্মের সময় অত্যন্ত দূর্বল এবং কম ওজনের হওয়ার কারণে তাকে অস্ত্রপচারের জন্য নেওয়া যায়নি। শরীরের ওজন স্বাভাবিক হওয়ার পর গত সোমবার তারা তাকে এআইআইএমএস এ আনেন।
অক্ষত’র বাবা মনোজ সাক্সেনা জানান, তাদের সন্তানটি পরিপক্বতা লাভের আগেই জন্ম নিয়েছে। তবে এখন তার অবস্থা অনেক ভাল। চিকিৎসার পরে সব ঠিকঠাক হয়ে যাবে বলে তারা আশা করছেন।
চিকিৎসকরা বলছেন, অক্ষত পলিড্যাকটাইলি নামে এক ধরনের বিরল সমস্যা নিয়ে জন্মেছে। এ সমস্যা হলে শিশুর শরীরে অতিরিক্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গজায়। তাকে ইনস্টিটিউটের শল্যচিকিৎসা বিভাগে নেওয়া হয়েছে।
হাসপাতালের শল্যচিকিৎসা বিভাগের চিকিৎসক ডা. পিপি কতোয়াল বলেন, অক্ষতের অবস্থাটা বিরলের মধ্যেও বিরল। এর আগে এমন ঘটনা ঘটেছে কি না জানা নেই। হাত-পায়ের আঙ্গুল ছাড়াও অক্ষতের শরীরের আরো অতিরিক্ত অঙ্গ রয়েছে কি না তা পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখনো তেমন কোনো আভাস পাওয়া যায়নি। তবে তার অতিরিক্ত রক্তকোষ রয়েছে কি না এখন তা পরীক্ষা করা হচ্ছে।
অক্ষতর ৩৪টি আঙ্গুল থাকলেও হাতে-পায়ে একটিও বৃদ্ধাঙ্গুল নেই। ডা. কতোয়াল বলছেন, এখন অপারেশনের মাধ্যমে অতিরিক্ত আঙ্গুলগুলো কেটে ফেলে দিয়ে আবার ওই গুলোর মধ্য থেকে একটি নিয়ে বৃদ্ধাঙ্গুলের জায়গায় স্থাপন করতে হবে। নতুন করে রোপন করা এই আঙ্গুল স্বাভাবিক আকার পেতে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
অবশ্য অম্রিতা ও মনোজ দম্পতি সন্তানের এই সমস্যাকে কখনো কুলক্ষণ বলে মনে করেননি। তারা বলছেন, এই পুত্র তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, জুন ১৬, ২০১১