বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ইয়াঙ্গুনে দায়িত্বরত জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফানে দুজারিক সংবাদমাধ্যমকে তাদের পরিদর্শন কর্মসূচি বাতিলের কথা জানান। তবে নাইপিদো কী কারণে বৃহস্পতিবার নির্ধারিত এই পরিদর্শন বাতিল করেছে, তা জানাতে পারেননি ওই মুখপাত্র।
গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ শুরু হলে প্রাণে বাঁচতে প্রায় পৌনে ৫ লাখ মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বিভিন্ন সংস্থার তথ্য মতে, এই নিধনযজ্ঞ চলাকালে ৩ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গাকে হত্যা করেছে সেনাবাহিনী। গণধর্ষণ করেছে শত শত কিশোরী, তরুণী ও গৃহবধূকে। এই ঘটনায় বিশ্বব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে। তারপর থেকে জাতিসংঘ রাখাইনে তদন্ত করতে প্রতিনিধি দলকে পরিদর্শনের সুযোগ দিতে নাইপিদোর ওপর চাপ দিয়ে আসছে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী দাবি করে আসছে, রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র একটি পক্ষ তাদের স্থাপনায় হামলা চালানোর পর সেখানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালানো হয়েছে। কিন্তু পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনস্রোত ও বিভিন্ন মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা বলছে, সেনাবাহিনী একটি জাতিগোষ্ঠীকে নির্মূলের অপচেষ্টায় নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে সেখানে। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের নাগরিক বলে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না। পৌনে ৫ লাখের মতো রোহিঙ্গা এই ক’সপ্তাহে পালিয়ে বাঁচলেও জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের অর্ধেকেরও বেশি বাড়িঘর। আরও হাজার হাজার মানুষ এখন বাস্তুহারা হয়ে জঙ্গলে জঙ্গলে পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
এমন প্রেক্ষাপটে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনার মুখে সম্প্রতি মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি বিশ্ববাসীকে রাখাইন পরিস্থিতি পরিদর্শন করতে বললে জাতিসংঘ সেখানে প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। প্রথমে প্রতিনিধি দলকে পরিদর্শনের অনুমোদন দিলেও এখন মিয়ানমার সরকার বলছে, কেউ রাখাইনে যেতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার এ নিয়ে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ বৈঠকে বসছে। বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদ সদস্যদের ব্রিফ করবেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতিয়েরেস। বাংলাদেশ আশা করছে, এ বৈঠকে মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে নতুন কোনো ঘোষণা আসবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০১৭
এইচএ/