বুধবার (১ নভেম্বর) এই তালিকা প্রকাশ করে ফোর্বস। প্রধানমন্ত্রীকে তালিকায় আখ্যা দেওয়া হয়েছে ‘লেডি অব ঢাকা’ হিসেবে।
শেখ হাসিনাকে তালিকায় ৩০তম স্থানে অধিষ্ঠিত করার বিষয়ে ফোর্বসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি’র একেবারে বিপরীতে অবস্থান নিয়ে ‘লেডি অব ঢাকা’ পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাদের থাকার জন্য বরাদ্দ করে দিয়েছেন দুই হাজার একর জায়গা। ’
দেশান্তরী রোহিঙ্গাদের ভরণ-পোষণে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকারের বিষয়টি উল্লেখ করে ফোর্বসের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘১৯৭১ সালে নিজের বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় গণহত্যার স্মৃতি শেখ হাসিনাকে তাড়িয়ে বেড়ায়, সেই তাড়না থেকে তিনি এই বিপুলসংখ্য শরণার্থীকে তার দেশে আশ্রয় দেওয়ার প্রচুর খরচ বহনেও গর্ববোধের কথা বলেন। তার সরকার এই শরণার্থীদের পরিচয়পত্র থেকে শুরু করে শিশুদের টিকা পর্যন্ত দিচ্ছে। ’
ক্ষমতাধর ১০০ নারীর তালিকায় টানা সপ্তমবারের মতো প্রথম হয়েছেন জার্মানির চ্যান্সেলর মেরকেল। সবমিলিয়ে ১২ বার এই তালিকার শীর্ষে জায়গা হলো ‘ইউরোপ নেত্রী’র। শরণার্থী সমস্যা, ইউরোপের অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলা, জার্মান অর্থনীতি মজবুতিকরণসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় মেরকেলকে এবারও প্রথমে রাখতে হয়েছে বিচারকদের।
তার পেছনে থাকা শীর্ষ চার জন হলেন—যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী টেরিজা মে, যুক্তরাষ্ট্রের মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস-পত্নী দানবীর মেলিন্ডা গেটস, ফেসবুকের চিফ অপারেটিং অফিসার শেরিল স্যান্ডবার্গ ও গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান জেনারেল মোটরস কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইও মেরি ব্যারা।
এছাড়া, তালিকায় ১৬তম অবস্থানে চিলির প্রেসিডেন্ট মিশেলে বাচলেট, ১৯তম অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প, ২১তম স্থানে মার্কিন জনপ্রিয় গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব অপরাহ উইনফ্রে, ২৬তম স্থানে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, ৩২তম স্থানে ভারতের অর্থনীতিবিদ ও আইসিআইসিআই ব্যাংকের সিইও চন্দ কোচার, ৫৭তম স্থানে একই দেশের তথ্যপ্রযুক্তিবিদ এবং আইটি সেবাদাতা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান এইচসিএল এন্টারপ্রাইজের সিইও ও নির্বাহী পরিচালক রোশনি নদর মালহোত্রা, ৬৫তম স্থানে যুক্তরাষ্ট্রের গত নির্বাচনের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন, ৬৯তম স্থানে ফেসবুক সিইও মার্ক জুকারবার্গ-পত্নী এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রিসিলা চ্যান, ৭১তম স্থানে ভারতের জৈবপ্রযুক্তি বিষয়ক কোম্পানি বায়োকনের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কিরণ মজুমদার-শাও, ৭৯তম স্থানে মার্কিন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আরিয়ানা হাফিংটন, ৮৮তম স্থানে যুক্তরাজ্যের বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় লেখিকা জে কে রাউলিং, ৯২তম স্থানে ভারতের হিন্দুস্থান টাইমস গ্রুপের সম্পাদকীয় পরিচালক ও চেয়ারপারসন শোবহানা ভারতীয়া, ৯৭তম স্থানে একই দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও সাবেক বিশ্বসুন্দরী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া রয়েছেন। তবে তালিকায় জায়গা হয়নি কোনো পাকিস্তানি নারীর।
তালিকাটি তৈরি করা হয়েছে সাতটি বিষয়কে ‘ক্ষমতার ভিত্তি’ ধরে। যেমন বিলিয়নিয়ার, ব্যবসায়ী, অর্থনীতিবিদ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, রাজনীতিবিদ, দানবীর বা স্বেচ্ছাসেবী এবং প্রযুক্তিবিদ। এই সাত ক্ষেত্রে যারা প্রভাব বিস্তার করে চলেছেন, তাদেরই রেটিং ধরে প্রস্তুত করা হয়েছে ক্ষমতাধরদের তালিকা।
ফোর্বস মিডিয়ার নির্বাহী ভাইস-প্রেসিডেন্ট মইরা ফোর্বস এ বিষয়ে বলেন, ২৯ দেশের এই ১০০ নারী বিশ্বের ৩শ’ কোটি মানুষের ওপর সরাসরি প্রভাব রাখেন। তারা এই বিপুল জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছেন বিশ্ব দরবারে।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৭
এইচএ/