ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ৯ ফিলিস্তিনি নিহত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫১ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৮
ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ৯ ফিলিস্তিনি নিহত ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভে নির্বিচারে গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ছে ইসরায়েলি বাহিনী (নিচের দিকে)

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ৩৫০ জন। ঐতিহাসিক ‘ভূমি দিবস’ উপলক্ষে ইসরায়েলি দখলদারিত্বের প্রতিবাদে ডাকা গণবিক্ষোভে গুলি করা হলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ছয় সপ্তাহব্যাপী বিক্ষোভের প্রথম দিন শুক্রবার (৩০ মার্চ) ইসরায়েল সীমান্ত ঘেঁষে ছয়টি স্থানে আন্দোলনে নামে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি। এসময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে ইসরায়েলি বাহিনী।



এতে হতাহতের বিষয়ে ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, গাজার উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়া এলাকায় বিক্ষোভের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালালে মোহাম্মদ নাজ্জার (২৫) নামে এক যুবক নিহত হন। তার পেটে গুলি করা হয়। আর রাফায় গুলিতে নিহত হন মাহমুদ মুয়াম্মার (৩৮), মোহাম্মদ আবু ওমর (২২) নামে আরও দু’জন। বিভিন্ন স্থানে প্রাণ হারান আহমেদ কুদেহ (১৯), জিহাদ ফ্রেনেহ (৩৩), মাহমুদ সাদি রাহমি (৩৩), আবদেল ফাত্তাহ (২২) এবং ইব্রাহীম (২০) নামে আরও পাঁচজন।  

বিক্ষোভের ঠিক আগে গাজার দক্ষিণাঞ্চলের খান ইউনিস শহরের অদূরে ইসরায়েলি বাহিনীর আর্টিলারির গোলায় প্রাণ যায় ওমর ওয়াহিদ আবু সামাউর নামে এক কৃষকের।

ইসরায়েলি বাহিনীর তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ‘ছয়টি স্থানে দাঙ্গা সৃষ্টির করার চেষ্টা হলে তা প্রতিহত করতে মূল প্ররোচকদের লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। ’

‘গ্রেট মার্চ অব রিটার্ন’ শীর্ষক এই বিক্ষোভে চালিয়ে যেতে ফিলিস্তিনিরা সীমান্তে অন্তত পাঁচটি তাঁবু গেড়েছে। বলা হচ্ছে, এই বিক্ষোভ চলবে ১৫ মে পর্যন্ত। আন্দোলনকারীরা ইসরায়েলের দখলকৃত তাদের আবাসসহ ভূমি ফিরে পাওয়ার জোর দাবি তুলেছেন।

বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে ভাষণে গাজার নিয়ন্ত্রক হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়াহ বলেন, আমরা একটি ফিলিস্তিনের জমির এক ইঞ্চিও ছাড় দিতে পারি না। ফিলিস্তিনি জনগণের কাছে এর কোনো বিকল্প নেই এবং জমি ফেরত পাওয়া ছাড়া কোনো উপায়ও নেই।

বিক্ষোভের মতো অহিংস কর্মসূচিতে ইসরায়েলি বাহিনীর এমন আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। ‘প্যালেস্টাইনিয়ান রাইটস ইন ইসরায়েল’ নামে একটি সংগঠন বলেছে, ‘এ ধরনের শক্তিপ্রয়োগ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন’।

১৯৭৬ সাল থেকে বছরের ৩০ মার্চ ‘ভূমি দিবস’ পালন করছে ফিলিস্তিনিরা। ওই সময় ইসরায়েলি বাহিনীর দখলদারিত্বের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় ছয় ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র সৃষ্টির সময় তাদের নেতৃত্ব ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করে গাজা ও পশ্চিম তীরে পাঠিয়ে দেয়। ইসরায়েলের নেতৃত্বের বক্তব্য, বাস্তুচ্যুত শরণার্থীরা ভবিষ্যৎ গাজা ও পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রে বসবাস করবে। কিন্তু ফিলিস্তিনিরা এই অবিচার প্রত্যাখ্যান করে তাদের স্বগৃহে পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৮
এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।