ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বালাকোটের মতো হামলার জন্য ‘হাইটেক ড্রোন’ বানাচ্ছে ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০১৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৩, ২০১৯
বালাকোটের মতো হামলার জন্য ‘হাইটেক ড্রোন’ বানাচ্ছে ভারত গুচ্ছ ড্রোন তৈরি করছে ভারত। প্রতীকী ছবি

ঢাকা: মাত্র এক দশক পরেই ঝাঁকে ঝাঁকে চালকবিহীন ড্রোন নিয়ে শত্রুপক্ষের আকাশসীমায় প্রবেশ করতে পারবে ভারত। স্বয়ংক্রিয়ভাবে উড়তে উড়তেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে লক্ষ্যবস্তু চিহ্নিত করে তাতে হামলা চালাবে ড্রোনগুলো। ইতোমধ্যে এ ধরনের ড্রোন তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছে দেশটি।

শুক্রবার (১২ জুলাই) একথা জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, প্রতি ঝাঁকে কয়েক ডজন ড্রোন থাকতে পারে।

শত্রুপক্ষ সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেমের মতো প্রযুক্তির মাধ্যমে কয়েকটি ড্রোন ধ্বংস করলেও, বাকিগুলো ঠিকই লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়ে মিশন শেষ করতে পারবে।  

সরকার পরিচালিত হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড ও ব্যাঙ্গালুরুর নিউস্পেস রিসার্চ অ্যান্ড টেকনোলজিস যৌথভাবে দেশটির প্রথম গুচ্ছ ড্রোন তৈরিতে কাজ করছে। আগামী দুই বছরের মধ্যেই এর প্রটোটাইপ আনতে চান প্রতিষ্ঠান দু’টির প্রকৌশলী ও সফটওয়্যার বিশেষজ্ঞরা।

ড্রোনগুলোর নাম রাখা হয়েছে এয়ার লঞ্চড ফ্লেক্সিবল অ্যাসেট (সোয়ার্ম) বা আলফা-এস।

এসব উচ্চ-প্রযুক্তির (হাইটেক) ড্রোনগুলোতে থাকবে এক থেকে দুই মিটার লম্বা ভাঁজযোগ্য দু’টি ডানা। বেশিরভাগ ড্রোনই ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলোর ডানার নিচে সংযুক্ত থাকবে। পাইলটরা নিরাপদ দূরত্বে থেকে ড্রোনগুলো অবমুক্ত করবেন। এরপর, সেগুলো নিজেরাই ঘণ্টায় প্রায় ১০০ কিলোমিটার গতিতে উড়ে গিয়ে লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাবে। ড্রোনগুলোকে কয়েক ঘণ্টা ওড়ার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি যোগাবে বিশেষ ধরনের ব্যাটারি।

প্রথম প্রপোটাইপ ড্রোনগুলো যুক্ত করা হবে হক অ্যাডভান্সড জেটের সঙ্গে। পরবর্তীতে, ভারতীয় বিমানবাহিনীর সব ধরনের উড়োযানের সঙ্গেই সেগুলো যুক্ত থাকবে।

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এ কাজের এক প্রকল্প কর্মকর্তা বলেন, এটাই আকাশযুদ্ধের ভবিষ্যৎ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উন্নয়নের মাধ্যমে এ ধরনের ‘স্মার্ট ড্রোন’ ঝুঁকিপূর্ণ মিশনে পাইলটের জায়গা নিয়ে নেবে। এতে যুদ্ধের সময় বিমানবাহিনীকে আর ওই ধরনের (পাইলটের প্রাণহানি) ক্ষয়ক্ষতির মুখোমুখি হতে হবে না।

তিনি বলেন, ড্রোনগুলো ইলেক্ট্রনিক ডাটা-লিংকের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। ইনফ্রারেড ও ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল সেন্সর ব্যবহার করে তারা সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল সিস্টেমের মতো লক্ষ্যবস্তু নির্ণয় করতে সক্ষম।  

প্রত্যেকটি ড্রোনে উচ্চমাত্রার বিস্ফোরক থাকবে, যা দিয়ে সেটি লক্ষ্যবস্তুতে আত্মঘাতী হামলা চালাবে।

এসব ড্রোন তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, যা এখনো বাজারে সহজলভ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কয়েকটি দেশ এসব প্রযুক্তি তৈরি করছে।

ওই প্রকল্প পরিচালক বলেন, এ ধরনের (ড্রোন নির্মাণের) পরীক্ষা সারাবিশ্বেই চলছে, তবে কোনো দেশই তাদের প্রযুক্তি অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করবে না।  

এ কারণে, কমব্যাট এয়ার টিমিং সিস্টেম বা ক্যাটস প্রকল্পের আওতায় দেশীয় প্রযুক্তিতে গুচ্ছ ড্রোন তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে ভারত।  

ক্যাটস প্রকল্পে আল্ট্রা-হাই অ্যাল্টিচিউড অর্থাৎ অনেক উচ্চতায় ওড়ার মতো একটি ড্রোন তৈরি হচ্ছে, যেটা একটানা তিন সপ্তাহ উড়তে সক্ষম, পাশাপাশি তাৎক্ষণিক ছবি ও ভিডিও সম্প্রচার করবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।