ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

কাশ্মীর ইস্যুতে সোচ্চার হতে বললেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৯
কাশ্মীর ইস্যুতে সোচ্চার হতে বললেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী

ভারতশাসিত কাশ্মীরের জন্য সংবিধানে ৩৭০ অনুচ্ছেদের মাধ্যমে রাখা বিশেষ মর্যাদা নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি সরকার কেড়ে নেওয়ায় শুরু থেকেই সংক্ষুব্ধ দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব যেমন সংসদে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গলা ফাটিয়েছে, তেমনি সংসদের বাইরেও সমালোচনার তোপ দেগেছে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে। এবার যেন ক্ষোভ উগরে দিলেন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।

কাশ্মীরের পরিস্থিতি দেখতে এবং সেখানকার রাজ্যপাল সত্যপাল মালিকের সঙ্গে দেখা করতে শনিবার (২৪ আগস্ট) কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীসহ শীর্ষ নেতৃত্ব সেখানে গেলেও তাদের শ্রীনগর বিমানবন্দর থেকেই ফেরত পাঠানোয় এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রিয়াঙ্কা।

টুইটারে নিজের অ্যাকাউন্টে একাধিক বার্তায় কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক বলেন, কাশ্মীরিদের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেয়ে বেশি ‘রাজনৈতিক ও জাতীয়তা-বিরোধী’ আর কিছু হতে পারে না।

রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেসের বিরোধী নেতারা দিল্লি থেকে শ্রীনগর বিমানবন্দরে নামলে তাদের সেখান থেকেই ফেরত পাঠায় কর্তৃপক্ষ। তবে অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, প্লেনে রাহুল গান্ধী ও কংগ্রেস নেতাদের পেয়ে কাশ্মীরের এক ক্ষুব্ধ নারী তাদের দুর্দশার বিষয়টি তুলে ধরেন।

সেই ভিডিওটিই টুইটারে শেয়ার করে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বলেন, ‘এমন অবস্থা আর কতোদিন চলবে? ‘জাতীয়তাবাদের’ নামে যে লাখো মানুষকে স্তব্ধ করে রাখা হয়েছে এবং দুর্দশায় ফেলা হয়েছে, তাদের মধ্যেই একজনের প্রতিক্রিয়া দেখুন। ’

আরেকটি টুইটে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘কাশ্মীরে সব গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেয়ে বেশি ‘রাজনৈতিক ও জাতীয়তা-বিরোধী’ আর কিছু হতে পারে না। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া আমাদের দায়িত্ব এবং আমরা এ দায়িত্ব এড়িয়ে যাবো না। ’

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদায় সংবিধানে রাখা ৩৭০ অনুচ্ছেদ আগস্টের শুরুতে বাতিল করে দেয় নরেন্দ্র মোদীর বিজেপি সরকার। তবে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আগে নাটকীয় কায়দায় অঞ্চলটিজুড়ে সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়। বন্দি করা হয় সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি, ওমর আব্দুল্লাহসহ মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক নেতাকে। ইন্টারনেট, ক্যাবল নেটওয়ার্কসহ যাবতীয় সব যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। কারফিউ জারি করে রাস্তায় রাস্তায় সাঁজোয়া যান নিয়ে অবস্থান নেয় সশস্ত্র বাহিনী।

সংবাদমাধ্যম বলছে, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকরা চলে যাওয়ার সময় উপমহাদেশ ভাগ হয়ে গেলে তখন মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের শাসকরা বিশেষ শর্তে ভারতে যোগ দেন। সেই শর্তটিই ৩৭০ অনুচ্ছেদ আকারে সংবিধানে সংরক্ষিত ছিল। এই অনুচ্ছেদের আওতায় কাশ্মীর আলাদা সংবিধান ও পতাকার স্বাধীনতা ভোগ করতো। এমনকি সেখানে সরকারি চাকরি, জমি কেনা এবং ব্যবসা করার সুযোগটিও ছিল কেবল কাশ্মীরিদের জন্যই। কিন্তু ওই অনুচ্ছেদ বাতিলের কারণে সেসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কাশ্মীরিরা।

এই সিদ্ধান্তের পরই সংসদে সরব হয় কংগ্রেস, সিপিএমসহ অনেক বিরোধী রাজনৈতিক দল। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ও অনুচ্ছেদটি বাতিলের সমালোচনা করেন।

কাশ্মীরের পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে সম্প্রতি শ্রীনগর বিমানবন্দরে আটক হন কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়া-মার্ক্সিস্টের (সিপিএম) মহাসচিব সীতারাম ইয়েচুরি। যদিও পরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এরপর শনিবার রাহুলসহ অন্য বিরোধী নেতারাও কাশ্মীরে গেলে তাদের ফেরত পাঠানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, আগস্ট ২৫, ২০১৯
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।