তিউনিস: আরব রাজ্যে গণঅভ্যুত্থানের নায়ক মোহামেদ বুয়াজিজি। নিজের জীবন উৎসর্গ করে স্বৈরশাসক জয়েন আল আবেদিন বেন আলির বিরুদ্ধে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছেন তিনি।
রোববার তিউনিসিয়া বিপ্লবের বর্ষপুর্তিতে সিদি বুজিদ এলাকায় হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। এখানেই বুয়াজিজির ফলের গাড়ির প্রতিমূর্তি উন্মোচণ করা হয়। তিউনিসিয়ার নুতন প্রেসিডেন্ট মনসেফ মারকুজিও এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
এই সিদি বুজিদেই ফল বিক্রেতা বুয়াজিজি প্রেসিডেন্ট বেন আলির সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরূপ নিজের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়, কিন্তু ইতোমধ্যে শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গেছে তারা। কোমায় থেকে ৫ জানুয়ারি তিনি মারা যান।
তার এই আত্মহত্যা আরবজুড়ে বিদ্রোহের জোয়ার বইয়ে দেয়।
এই প্রতিমূর্তি উন্মোচণ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট মারজুকি বলেন, ‘এই ভূখণ্ডের সব মানুষকে ধন্যবাদ, যারা বহু বছর ধরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী হিসেবে ছিলেন, তারাই এখন তিউনিসিয়াকে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করেছেন। ’
২৩ বছরের স্বৈরশাসক জয়েন আল আবেদিনের পতনের পর গত অক্টোবরে তিউনিসিয়ায় প্রথম গণতান্ত্রিক নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন মারজুকি।
২৬ বছর বয়সী ফল ও সবজি বিক্রেতা বুয়াজিজির মাসিক আয় ছিল মাত্র দেড়শ’ ডলার। এই আয়ের ওপর জীবিকা নির্বাহ করত আটজন মানুষ। বুয়াজিজির স্বপ্ন ছিল ব্যবসা আরও বড় করবেন, দুই চাকার ঢেলা ভ্যান থেকে তিনি একটি পিকআপ ট্রাক কিনবেন।
তার পরিবার জানায়, ঘুষ দিতে অস্বীকার করায় সরকারের তিন কর্মকর্তা তার মালপত্র ছিনিয়ে নেয় এবং তাকে মারধর করে। গভর্নর তার অভিযোগ না শোনার কারণে ক্ষোভে হাতাশায় তিনি গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
এই আগুন ছড়িয়ে যায় আরব বিশ্বে। এর পরই একের পর এক দেশে বিদ্রোহ শুরু হয়। মিশর, লিবিয়া, ইয়েমেন, সিরিয়ার সব বিক্ষোভ তার ত্যাগের দ্বারাই অনুপ্রাণিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১১