টোকিও: জাপানের অভ্যন্তরীণ শিল্প উৎপাদনে ভাটা পড়েছে। গত নভেম্বরের শেষে দেশটির শিল্প উৎপাদন গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ কমে গেছে।
বিশ্ব মুদ্রাবাজারে ইয়েনের শক্তিশালী অবস্থান, আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের কাছে জাপানি পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়া এবং থাইল্যান্ডে সাম্প্রতিক বন্যায় জাপানি কোম্পানিগুলোর খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে উৎপাদনে এই অধোগতি।
জাপানের অর্থ, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় বুধবার এই তথ্য জানিয়েছে।
জাপানের অর্থনীতি এ বছর ০.০১ শতাংশ সঙ্কুচিত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশের কয়েকদিন পরেই এই তথ্য প্রকাশ করা হল। সেই সঙ্গে অনুমিত প্রবৃদ্ধির ০.০৫ শতাংশ কমে যাবে বলে ধারণা করা হয়েছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা আশা করছেন, জাপানি কারখানাগুলো সামনের মাসগুলোতে আবারও পুর্ণোদ্যমে উৎপাদন শুরু করলে বর্তমান অবস্থার উত্তরণ ঘটবে।
জাপানের একজন শীর্ষ অর্থনীতি বিশ্লেষক মাসাকি কানো বলেছেন, থাইল্যান্ডে বন্যার কারণে মূলত গাড়ি এবং কম্পিউটার শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক যন্ত্রাংশের সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে। কারণ জাপানি কোম্পানির খুচরা যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানাগুলো মূলত থাইল্যান্ডে অবস্থিত।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জাপানের অর্থনীতি চলতি বছর ভূমিকম্প-সুনামি, থাইল্যান্ডে বন্যা, ইউরোপে অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে রপ্তানি বাণিজ্যে মন্দা এসব নানা কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সেই সঙ্গে ইয়েনের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় জাপানের রপ্তানিপণ্য বিশ্ববাজারে ব্যাপক প্রতিযোগিতার মুখে পড়ে । ইয়েনের দর বৃদ্ধিতে বিশ্ববাজারে জাপানি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বিদেশি ক্রেতারা এসব পণ্য কিনতে অনাগ্রহী হয়ে পড়েন।
তবে চুড়ান্তভাবে ইউরোজোনের অর্থনৈতিক সঙ্কটকেই জাপানের অর্থনীতির দুর্দশা অব্যাহত থাকার অন্তর্নিহিত কারণ বলে মনে করছেন ব্যাংক অব জাপানের গর্ভনর মাসাকি সিরাকাওয়া।
চলতি বছরের শেষ প্রান্তিকে জাপানের অভ্যন্তরীণ মোট শিল্প উৎপাদন আবারও দুর্বল হবে বলে মনে করছেন অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান আইএইচএস গ্লোবাল ইনসাইট- এর বিশ্লেষক রাজীব বিশ্বাস ।
২০১২ সালে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ২.৯ শতাংশ হবে বলে জাপান এর আগে ধারণা করলেও বর্তমানে তাদের প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা কমে দাঁড়িয়েছে ২.২ শতাংশে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১১