ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

২০১২ তেই অবসরে যেতে হচ্ছে ভারতের সেনা প্রধান ভিকে সিংকে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:২৭, ডিসেম্বর ৩০, ২০১১
২০১২ তেই অবসরে যেতে হচ্ছে ভারতের সেনা প্রধান ভিকে সিংকে

নয়াদিল্লি: জন্ম তারিখ নিয়ে দীর্ঘ লড়াই করেও চাকরির বয়সসীমা বাড়াতে পারলেন না ভারতের সেনা প্রধান জেনারেল ভিকে সিং।

শুক্রবার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জন্মতারিখ পরিবর্তনের জন্য করা ভিকে সিংয়ের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে।



শুক্রবার এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি হিসেবে মন্ত্রণালয় এটর্নি জেনারেলের মতামতের উল্লেখ করেছে।

এর আগে গত ১৬ ডিসেম্বর ভারতের এটর্নি জেনারেল বলেছিলেন, সেনা প্রধানের জন্মতারিখ ১০ মে ১৯৫০ সালই হতে হবে।

মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তার সঙ্গে যোগাযোগ করার পর তিনি অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির সঙ্গে দেখা করেছেন বলে জানা গেছে। তবে সেখানে কী কথা হয়েছে সে ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।

তবে সেনা প্রধানের আবেদন মন্ত্রণালয় থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে খারিজ হয়ে যাওয়ার পর এখন তিনি চাইলে আদালতে যেতে পারবেন।

ভারতের সেনা বাহিনীর বিভিন্ন রেকর্ডে জেনারেল ভিকে সিংয়ের জন্মতারিখ উল্লেখ রয়েছে, ১০ মে, ১৯৫০ এবং ১০ মে ১৯৫১ সাল। সেনা প্রধান বরাবর দাবি করে আসেছন, তার আসল জন্মতারিখ ১০ মে ১৯৫১। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, তার সঠিক জন্মতারিখ ১৯৫০ সালেই।

সেনা প্রধানের জন্মতারিখ পরিবর্তন সেনা বাহিনীর ঐতিহ্যবাহী নীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করে ভারতের সুপ্রিমকোর্ট। এই বিষয়টির তাৎপর্য সবচে বেশি যখন এটি তার অবসরের সময় নির্ধারণ করে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, সেনা প্রধান ভিকে সিংকে ২০১২ সালেই অবসরে যেতে হবে। কিন্তু সেনা প্রধানের দাবি মেনে নিলে, তার অবসরের সময় ২০১৩ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করতে হবে।

এ বিষয়টি শেষ পর্যন্ত সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত গড়ায়। অবশেষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবিই প্রতিষ্ঠিত হল।

বয়সের এই বিতর্কের ব্যাপারে সিংয় জানান, ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশন পরীক্ষার সময় কেরানি ভুল করে তার বয়স উল্লেখ করে ১৬ বছর, আসলে তখন তার বয়স ছিল ১৫ বছর। এই আবেদন পত্রটিই জাতীয় প্রতিরক্ষা একাডেমিতে দাখিল করা হয়।

তিনি বলেন, সেনা বাহিনীতে যোগ দেওয়ার পর তার চাকরিতে সব পদোন্নতি হয়েছে জন্মতারিখ ১৯৫১ সালের ভিত্তিতে।

উল্লেখ্য, রাজপুত রেজিমেন্টে কমিশনপ্রাপ্ত হয়ে ভিকে সিং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও অংশ নেন। তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বেশ কিছু সম্মুখ লড়াইয়েও অংশ নিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল ফেনী এবং কক্সসবাজার।

জেনারেল সিং ভারতের সেনা প্রধান হওয়ার আগে কলকাতায় অবস্থিত ভারতীয় সেনাবাহিনী পূর্বাঞ্চলীয় সেনা কমান্ডের প্রধান হিসেবে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সঙ্গে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সম্পর্ক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।

সম্প্রতি ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই শীর্ষ কর্মকর্তা তার স্ত্রী ভারতী সিং এবং অন্যান্য সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাংলাদেশ সফর করে গেছেন। এসময় তিনি বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনাও ঘুরে দেখেন।

জেনারেল সিং ভারত থেকে তার সঙ্গে বাংলাদেশের জন্য উপহার হিসেবে দুটি ৩.৭ ইঞ্চি হুইটজার কামান এবং সেনা প্রশিক্ষণে ব্যবহৃত এমন ৫০টি কম্পিউটার সমৃদ্ধ একটি আধুনিক ল্যাব নিয়ে আসেন।

এর পাশাপাশি জেনারেল সিং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে একটি রক ক্লাইম্বিং ওয়ালও উপহার দেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সেনারা পর্বত আরোহনের প্রশিক্ষণ নিতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।