ইসলামাবাদ: সংসদ চাইলে আস্থা ভোটের আগেই পদত্যাগ করবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানি।
সোমবার প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি ও রাজনৈতিক মিত্রদের সঙ্গে এক আলোচনায় তিনি নিজেই একথা জানান।
বেসামরিক সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যকার দ্বন্দ্বের চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে গিলানি এ মন্তব্য করলেন।
এদিকে গিলানিকে কেন আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করা হবে না জানতে চেয়ে সোমবারই নোটিশ পাঠিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
শুধু তাই নয় তাকে আগামী জানুয়ারির সশরীরে আদালতে হাজির হওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।
পাকিস্তানের পার্লামেন্টে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বর্তমান শাসক দলের উত্থাপিত একটি প্রস্তাবে ভোটাভুটির প্রাক্কালে সুপ্রিম কোর্টের এই সমন জারি করা হলো বলে জানায় পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম।
এদিকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালতে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারির বিরুদ্ধে অবৈধ সুবিধা গ্রহণের অভিযোগে দায়ের করা পুরনো মামলার পুন:শুনানি চলছে।
ধারণা করা হচ্ছে, আদালতে চলমান এই মামলার নিষ্পত্তিতেই পাকিস্তানের বর্তমান বেসামরিক সরকারের কফিনে শেষ পেরেক ঠোকার রাস্তা পরিষ্কার হবে।
পিপলস পার্টির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তানের বর্তমান বেসামরিক সরকার ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রের প্রভাবশালী ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক দেশটির শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সংগে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে টলটলায়মান অবস্থায় ক্ষমতায় টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যস্ত।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী ও দেশটির সর্বোচ্চ আদালত , রাষ্ট্রের এই দুই সর্বোচ্চ প্রভাবশালী পক্ষের সংগে দ্বিমুখী লড়াইয়ে লিপ্ত পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গিলানি পার্লামেন্টে অনুষ্ঠেয় ভোটকে শুধু একটি আস্থা ভোট হিসেবে উল্লেখ না করে, একে দেশের গণতন্ত্র ও স্বৈরতন্ত্রের মধ্যকার লড়াই হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, প্রেসিডেন্ট জারদারি ও প্রধানমন্ত্রী গিলানী পার্লামেন্টে শুরু হতে যাওয়া ভোটকে শুধু বর্তমান ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির ক্ষমতায় টিকে থাকার সংগ্রাম হিসেবে না দেখিয়ে, স্বৈরতন্ত্রের বিপরীতে গণতন্ত্রকে রক্ষার লড়াই হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করবেন।
যদি আজকের ভোটে তারা জয়লাভ করেন, তবে ধারণা করা হচ্ছে প্রধান মন্ত্রী গিলানী নৈতিকভাবে একজন বিজয়ী হিসেবেই বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোর্টে হাজিরা দিতে যাবেন।
তবে এর মধ্যেই গিলানি পার্লামেন্টে তার বিরোধীদের সমর্থন লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমান সরকারের ঘোর সমালোচক হিসেবে বিবেচিত, সাবেক পাকিস্তানী ক্রিকেট অধিনায়ক এবং পার্লামেন্টের অন্যতম বিরোধী দল তেহরিক ই ইনসাফের প্রধান ইমরান খান বলেছেন- তারা জারদারি সরকারের কট্টর সমালোচক হলেও যে কোন সামরিক অভ্যুত্থান বা শাসনের বিরোধী।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০১২