কাবুল: আফগানিস্তানে চলমান সংঘাতে বেসামরিক নাগরিক হতাহতের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। বিগত কয়েক বছর ধরেই বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণহানি বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা।
সম্প্রতি প্রকাশিত আফগানিস্তানে অবস্থারত জাতিসংঘের সহযোগিতা মিশন ‘ইউনামা’র প্রতিবেদনে হতাহতের তথ্য তুলে ধরে এই উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ২০১১ সালে আফগানিস্তানে সংঘাতে ৩ হাজার ২১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। অথচ এর আগের বছর ২০১০’এ এই সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭৯০ জনে এবং ২০০৯ সালে ছিল ২ হাজার ৪১২ জন।
আফগানিস্তানে বিবদমান পক্ষগুলোর সংঘাতের কবলে পড়েই এই বেসামরিক নাগরিকরা নিহত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।
আফগানিস্তানে বিদেশি সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহীদের ব্যবহৃত ইমপ্রোভাইসড এক্সপ্লোসিভ (একধরনেরে বোমা) ব্যবহারের কারণে হতাহতের ঘটনা বাড়ছে বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ। পাশাপাশি আত্মঘাতী বোমা হামলাও বেসামরিক লোকের প্রাণহানি বেড়ে যাওয়ার বড় কারণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
তবে আফগানিস্তানে বিদেশি বাহিনীর বিমান হামলায়ও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেসামরিক নিহত হওয়ার কথা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০০৭ সালের পর থেকে ২০১১ সালের শেষ পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার ৮৬৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০১১ সালে নিহত বেসামরিক নাগরিকদের ৭৭ শতাংশের মৃত্যুর জন্য দায়ী বিদ্রোহীরা। অপর দিকে ১৪ শতাংশের মৃত্যুর জন্য বিদেশি বাহিনী দায়ী।
তবে ২৭৯ জন বা ৯ শতাংশ বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যুর জন্য উভয়পক্ষকেই দায়ী করা হয়েছে।
ন্যাটো জোটের বিমান হামলায় ২০১১’তে ১৮৭ জন নিহত হয়েছে যা ২০১০ সালের চেয়ে এই পরিমাণ ৯ শতাংশ বেশি।
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার নাভি পিল্লাই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় বলেন, বেসামরিক নাগরিক মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় তিনি খুব উদ্বিগ্ন।
আফগানিস্তানের ওপর প্রকাশিত এই প্রতিবেদনটি তিনি আগামী মার্চে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘের মানবাধিকার সম্মেলনে করবেন বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১২