ঢাকা, শনিবার, ২২ ভাদ্র ১৪৩২, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

মালদ্বীপে ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০:৪০, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১২
মালদ্বীপে ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা

মালে: রাজধানী মালেসহ পুরো মালদ্বীপে ছড়িয়ে পড়েছে অভ্যুত্থানোত্তর সহিংসতা। মঙ্গলবার আকস্মিকভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্যুতে ক্ষমতা হারানো সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদের সমর্থকরা বুধবার রাজধানী মালেসহ সারাদেশে বিক্ষোভ করে।



অস্ত্রের মুখে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে বলে বুধবার মোহাম্মদ নাশিদ অভিযোগ করার পর মূলত তার সমর্থকরা বিক্ষোভ শুরু করে।

দেশটিতে ছুটি কাটাতে আসা পর্যটকদের কাছে বিখ্যাত রিসোর্ট হলিডে প্যারাডাইস নেশনের কর্মকর্তারা একটি গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার এলাকাটির বাসিন্দাদের বেশ কয়েকটি পুলিশ স্টেশন এবং বেশ কিছু সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ করতে দেখা গেছে।

এর আগে রাজধানী মালের স্বাধীনতা স্কোয়ারে পুলিশ ও সেনা সদস্যদের সাথে মোহাম্মদ নাশিদের সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হটাতে টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জ করে।

আব্দুল মান্নান ইউসুফ নামে এক পুলিশ কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানান, সংঘাত ক্রমশ ভৌগলিকভাবেও ছড়িয়ে পড়ছে। বিশেষ করে সবচেয়ে বেশি গুরুতরভাবে তা ছড়াচ্ছে রাজধানী মালের বাইরে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাই একটি যৌথ অভিযান পরিচালনা করতে পারে। কিন্তু এই অভিযান ঠিক কখন এবং কিভাবে হবে তা এখনো ঠিক হয়নি বলে তিনি জানান।

দেশটির সর্ব দক্ষিণের শহর আদ্দুর মেয়র জানিয়েছেন, সেখানে নাশিদ সমর্থকরা একটি পুলিশ স্টেশন পুড়িয়ে দিয়েছে। এমন হামলা আরো কয়েকটি বিচ্ছিন দ্বীপেও ঘটেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের না হটাতে পেরে পিছু হটেছে। থিনাদ্ধু দ্বীপের জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবীদ মোহাম্মদ শরিফ জানান, প্রায় সহস্রাধিক উশৃঙ্খল জনতা সেখানে পুলিশ স্টেশন, আদালত ভবন ও কাউন্সিল অফিসে আগুন দেয়।

এ প্রসঙ্গে মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে শনিবার তাদের একটি পর্যŸেক্ষক দল মালদ্বীপ পৌঁছাবে। এছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান ক্যাথরিন এস্টন মালে পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের গভীর উদ্বেগের কথা প্রকাশ করেছেন।

এদিকে গত মঙ্গলবার ক্ষমতা হারানো নাশিদ সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন, তিনি আগেই ধারনা করেছিলেন নতুন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ ওয়াহিদ অভ্যুত্থানে জড়িত সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের নীল নকশা সম্পর্কে জানতেন।

তিনি বলেন, ‘আমি ভয়ে ছিলাম এজন্য যে তিনি সবসময় প্রেসিডেন্ট হওয়ার ফন্দি আঁটছিলেন। যখনই সুযোগ এলো ঠিক তখনই ওয়াহিদ তা লুফে নিয়েছেন। ’

তিনি নতুন প্রেসিডেন্ট ওয়াহিদকে অবিলম্বে পদত্যাগের আহবান জানিয়েছেন। তবে মোহাম্মদ ওয়াহিদ তার বিরুদ্ধে করা নাশিদের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

অন্যদিকে নাশিদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, রাজধানীতে র‌্যালি করার সময় ৪৪ বছর বয়স্ক সাবেক ওই প্রেসিডেন্টসহ তার দল মালদ্বীপিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির বেশ কয়েকজন নেতার ওপর পুলিশি হামলা হয়েছে। এ সময় মোহাম্মদ নাশিদসহ ওই কর্মকর্তারা পুলিশের পিটুনিতে আহত হয়েছেন।

এদিকে ক্ষমতা গ্রহণের পর প্রথম সংবাদ সম্মেলনে নতুন প্রেসিডেন্ট ওয়াহিদ তার বিরুদ্ধে করা নাশিদের সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। যা হয়েছে তার তিনি কিছুই জানতেন না এবং এর জন্য সম্পুর্ণ অপ্রস্তুত ছিলেন বলেও জানান।

তিনি বলেন, ‘সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার কথা সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। তবে তারা প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগের ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়ার জন্য মুখপাত্র পাঠিয়েছিলো। ’

ওয়াহিদ আরো জানান, তিনি সত্যিকার অর্থেই কিছুদিনের মধ্যে একটি বহুদলীয় মন্ত্রীসভা গঠন করতে চান এবং তা মোহাম্মদ নাশিদের দল এমডিপিসহ সকল দলের সাথে আলোচনার মাধ্যমেই।

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।