ঢাকা, সোমবার, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

বিশ্বের সবচে ব্যয়বহুল শহর জুরিখ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২:৩১, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১২
বিশ্বের সবচে ব্যয়বহুল শহর জুরিখ

ঢাকা: জাপানের রাজধানী টোকিওকে হটিয়ে বিশ্বের ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে সুইজারল্যান্ডের বৃহত্তম শহর জুরিখ। ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের এক জরিপে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।



প্রতিষ্ঠানটি বছরে দুই বার এমন জরিপ করে। জরিপে পণ্য সামগ্রির স্থানীয় বাজারদর এবং বিভিন্ন ধরনের সেবা বাবদ খরচাদির বিষয়টি প্রাধান্য পায়। ব্যয়বহুল বিবেচনার সূচকগুলোর মধ্যে রয়েছে- খাদ্যমূল্য, যাতায়াত খরচ, দৈনন্দিন ব্যবহার্য্য দ্রব্যাদি, বেসরকারি স্কুলের খরচ ইত্যাদি।

সূচকের ভিত্তি ধরা হয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহর। এর জন্য ভিত্তি স্কোর নির্ধারণ করা হয় ১০০।

জুরিখ এবং টোকিও স্কোর করেছে যথাক্রমে ১৭০ ও ১৬৬। অর্থ্যাৎ নিউইর্য়কের চেয়ে জুরিখ ৭০ শতাংশ এবং টোকিও ৬৬ শতাংশ বেশি ব্যায়বহুল।

জরিপটিতে দেখা যায়, সম্মিলিতভাবে তৃতীয়স্থানে রয়েছে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা এবং জাপানের ওসাকা। তালিকার সমুদ্র উপকূলীয় ১০টি অঞ্চলকে এশিয়া এবং ইউরোপ এই দুইভাগে ভাগ করা হয়েছে। ইউরোপীয় শহরগুলো হচ্ছে- অসলো, প্যারিস এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট। মেলবোর্ন এবং সিঙ্গাপুরকে রাখা হয়েছে এশীয় অংশে।

তবে অবাক হওয়ার বিষয় হলো-  শীর্ষ দশের তালিকায় উত্তর আমেরিকার কোনো দেশের নাম নেই। নিউইয়র্ক ১১ ধাপ নেমে গিয়ে শিকাগোর সঙ্গে ৪৭তম অবস্থানে রয়েছে। তবে হলিউডের শহর লস অ্যাঞ্জেলেস এদের একধাপ উপরে আছে। আর লন্ডনের অবস্থান আগের চেয়ে দুই ধাপ নেমে ব্রাসেলস, নিউজিল্যান্ডের ওয়েলিংটন এবং অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডেলেইডের সঙ্গে ১৭তম স্থানে চলে গেছে।

ইকনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা বাজারে সুইস ফ্রাঁ’র মূল্য বৃদ্ধির কারণে কমপক্ষে দুই দশকের মধ্যে জুরিখের অবস্থান এই প্রথম শীর্ষে চলে এসেছে। আর ফ্রাঁ মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেখানে জীবনযাত্রার ব্যয়ও বেড়েছে।

উল্লেখ্য, টোকিওতে গ্যাসের দাম নিউইর্য়কের চেয়ে ৭১ শতাংশ বেশি। একারণে আগে মনে করা হত টোকিও পৃথিবীর সবচে ব্যয়বহুল শহর।

দশ বছর আগেও সিঙ্গাপুর ছিল নিউইর্য়কের চেয়ে ২ শতাংশ কম খরচের শহর। আর বর্তমানে নিউইর্য়কের চেয়ে ৪২ শতাংশ বেশি ব্যয়বহুল শহর এটি। এখন শীর্ষ তালিকায় সিঙ্গাপুরের অবস্থান নবম।

গত বছরের গ্রীষ্মকালে ঠিক এমনই এক জরিপ করেছিল মানবাধিকার সংস্থা মারসার। তালিকায় দেখা যায় প্রথমবারের মতো জীবনযাত্রার ব্যয়ে সিঙ্গাপুর হংকংকে ছাড়িয়ে গেছে। ইকোনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের জরিপে সিঙ্গাপুরের অবস্থান ছিল ২২তম।

অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেত্রে পরিবর্তনটি আরো মজাদার। এক বছর আগে সিডনি ছিল নিউইর্য়কের চেয়ে ২৫ শতাংশ কম খরচের শহরের তালিকায়। বর্তমানে এর খরচ বেড়েছে ৪৭ শতাংশ এবং তালিকার সপ্তম অবস্থানে উঠে এসেছে।

জরিপের সম্পাদক জন কপস্টক বলেন, অস্ট্রেলিয়া এবং সিঙ্গাপুরের মুদ্রার হার পরিবর্তন হওয়ার কারণে তাদের অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হয়েছে।

গত বছরে অস্ট্রেলীয় ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশটির কয়েকটি শহর ব্যয়বহুল শহরের তালিকায় ওপরে উঠে এসেছে।

তবে সব কিছু মিলিয়ে ব্যয়বহুল শহরের তালিকা বিভিন্ন শহরের স্থান পরিবর্তনের জন্য বিশ্ব অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতিকেই দায়ী করা হয়েছে।
 
এদিকে এশিয়া, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার শহরগুলো বসবাসের জন্য সবচেয়ে কম খরচের শহর। পাকিস্তানের করাচি রয়েছে সবচেয়ে কম খরচের শহরের তালিকায়। ১৩১টি দেশ নিয়ে যে তালিকা করা হয়েছে তাতে করাচির অবস্থান একদম নিচে। ১৩১তম স্থানে রয়েছে করাচি। এছাড়া সর্বশেষ ১০ এর তালিকায় রয়েছে ভারতের মুম্বাই এবং নয়াদিল্লি, নেপালের কাঠমান্ডু এবং বাংলাদেশের ঢাকা।

বাংলাদেশ সময়: ২২২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।