ঢাকা: তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরু করার জন্য পাকিস্তানের সহযোগিতা পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আফগান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই। যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা মতো কাতারে তালেবানের একটি কার্যালয় খোলার ব্যাপারে অনুমোদন দিলেও শান্তি প্রক্রিয়ায় মার্কিন কর্তৃপক্ষকে সেভাবে খবরদারি করতে দিতে রাজি নন তিনি।
এছাড়া এই প্রক্রিয়ার মধ্যে কাতারকে সম্পৃক্ত করার কারণে কিছুটা অস্বস্তি এবং অসন্তোষ যে কারজাইয়ের মধ্যে রয়েছে তা নানা সময় বোঝা গেছে।
সম্প্রতি পাক-আফগান-ইরান ত্রিদেশীয় আঞ্চলীক সম্মেলনে তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা শুরুর জন্য হামিদ কারজাই পাকিস্তানের সহযোগিতা চেয়েছেন। সেই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ রাখতে চান না সে কথাও জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
কারজাই গত শনিবার ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমেরিকানরা আমাদের হয়ে তালেবানের সঙ্গে এবং তালেবানের হয়ে আমাদের সঙ্গে কোনো মধ্যস্থতা করতে পারবে না। ’
কাতারে তালেবানের কার্যালয় স্থাপনের ব্যাপারে প্রথম দিকে আপত্তি থাকলেও পরে তার সরকার কেন রাজি হলো সে ব্যাপারটিও পরিষ্কার করে দিয়েছেন দিনি। তিনি বলেছেন, ‘কাতারে তালেবানের লিয়াজোঁ অফিস খোলার ব্যাপারে আমরা শুধু সম্মতিই দিয়েছি... আলোচনার স্থান, তালেবান এবং আমাদের মধ্যে প্রকৃত আলোচনা এমন কিছু হবে যা আমরাই নির্ধারণ করব। আমাদের পছন্দের স্থান সৌদি আরব অথবা তুরস্ক। ’
গত শনিবার পাকিস্তানি প্রতিনিধিদের সঙ্গে কারজাইয়ের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে আলোচনা এবং পরবর্তী বিবৃতি আফগান সরকার এবং তালেবানের মধ্যে শান্তি আলোচনার ব্যাপারে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বার্তা দিচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
আলোচনা এবং বিবৃতিতে শান্তি আলোচনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিচ্ছিন্নতা, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থহীন অংশগ্রহণ এবং কাবুলের ক্রমবর্ধমান হতাশার সঙ্গে এ বিষয়টিও ধরে নেওয়া হচ্ছে যে, এই মুহূর্তে পাকিস্তান শান্তি আলোচনার জন্য তালেবান নেতাদের আফগান সরকারের সঙ্গে বসতে দেওয়ার পক্ষপাতি নয়। এদিকে আবার শান্তি আলোচনায় অংশ নিতে ইচ্ছুক কি না সে ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলছে না তালেবান।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আপাত দৃষ্টিতে সার্বিক পরিস্থিতি খুবই অস্পষ্ট। এটা পরিষ্কার নয় যে, কাতারে তালেবানের লিয়াজোঁ অফিস নিয়ে আফগানিস্তান সরকারের আপত্তি সত্ত্বেও কীভাবে শান্তি আলোচনা এগিয়ে যাবে।
তবে একটা বিষয় স্পষ্ট, আফগানিস্তান যুদ্ধে ক্লান্ত যুক্তরাষ্ট্র এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে হামিদ কারজাইয়ের সরকার তালেবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে আগ্রহী।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১২