ঢাকা, সোমবার, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

‘ইরানের ব্যাপারে ইসরায়েল একাই সিদ্ধান্ত নেবে’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২:২৩, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১২
‘ইরানের ব্যাপারে ইসরায়েল একাই সিদ্ধান্ত নেবে’

ঢাকা: ইরানের বিরুদ্ধে এককভাবে সামরিক অভিযান চালানোর এক প্রকার ঘোষণাই দিয়ে ফেললেন ইসরায়েলি সেনা বাহিনীর চিফ অব স্টাফ।

গত শনিবার ইসরায়েলের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘নিজস্ব নিরাপত্তার প্রধান নিশ্চয়তাদাতা ইসরায়েল নিজেই।

সেনা বাহিনী হিসেবে এখানে আমাদের ভূমিকা রয়েছে, রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েল তার নিরাপত্তা নিজেই নিশ্চিত করবে। ’

বর্তমান পরিস্থিতিতে ইরান ইস্যু নিয়ে আলোচনার জন্য একজন শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কূটনীতিক ইসরায়েল সফরে আসার পরিপ্রেক্ষিতে আয়োজিত টিভি সাক্ষাৎকারে ইসরায়েলি সেনা বাহিনীর চিফ অব স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল বেনি গানৎজ এই কথা বলেন।

জেনারেল গানৎজ বলেন, ‘ইরানের উন্নয়ন এবং পরমাণূ প্রকল্প আমরা অবশ্যই পর্যবেক্ষণে রাখব। কিন্তু সারা বিশ্ব কী করছে এই বিবেচনায় ইরানের সিদ্ধান্ত কী, আমরা কী করব আর কী করব না এইসব অনেক বিস্তৃত পদ্ধতিগত ব্যাপার। ’

সাম্প্রতিক সময়ে এমন খবর চাউর হয়েছে, ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলার বিষয়টি অগ্রাধিকারভিত্তিতে বিবেচনা করছে। অবশ্য এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে এমন খবর অস্বীকার করেছে ইসরায়েল।

এদিকে গত শনিবার সুয়েজ খালের ভেতর দিয়ে ভূমধ্যসাগরে ইরানের যুদ্ধজাহাজ প্রবেশ করায় তেল আবিবের সঙ্গে  তেহরানের উত্তেজনা আরো বেড়েছে। ইসরায়েল বলছে, ইরানের এই গতিবিধি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে তারা।

পরমাণু কর্মসূচি ঘিরে পশ্চিমা বিশ্ব ও ইসরায়েলের সঙ্গে বিদ্যমান উত্তেজনার মধ্যে গত বুধবার নতুন করে তিন হাজার সেন্ট্রিফিউজ স্থাপন করেছে বলে ঘোষণা দিয়েছে ইরান। এর ফলে ইরানের পরমাণু জ্বালানির প্রধান উপাদান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সক্ষমতা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে, গত সপ্তাহে ভারত, জর্জিয়া এবং থাইল্যান্ডে ইসরায়েলি কূটনীতিকদের লক্ষ্য করে বোমা হামলা। এর জন্য ‘তেহরানের চর’দের দায়ী করছে ইসরায়েল। ইরান অবশ্য যথারীতি তা অস্বীকার করেছে।

একইভাবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নিজ ভূখণ্ডে পাতানো বোমার বিস্ফোরণে ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হওয়ার জন্য বারবার ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে দায়ী করছে ইরান।

সম্প্রতি একটি মার্কিন দৈনিকে প্রকাশিত নিবন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লিওন প্যানেট্টা বলেছিলেন, তার ধারণা আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ইসরায়েল ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাতে পারে।

গত শনিবারের সাক্ষাৎতকারে জেনারেল গানৎজ বলেন, ‘ইরান শুধু ইসরায়েলের জন্যই সমস্যা নয়, এটি আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক সমস্যাও বটে। ’

এদিন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এহুদ বারাক ইরানের বিরুদ্ধে অবরোধ আরো কঠোর করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘পরমাণূ কর্মসূচি বন্ধ করতে সরাসরি সামরিক অভিযানের বিরুদ্ধে একটি ‘অনাক্রম্য অঞ্চলে’ পরিণত হওয়ার আগে এটা করা উচিৎ। ’

উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ইরান প্রথম নিজস্ব পরমাণু কর্মসূচি শুরু করার পর নিজের অস্তিত্বের জন্য ইরানকেই সবচে বড় হুমকি বলে মনে করে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল।

পশ্চিমা আপত্তি উপেক্ষা করে পরমাণু কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে ইরান।   পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো এবং ইসরায়েলের দৃঢ় বিশ্বাস ইরান পরমাণু অস্ত্রের অধিকারী হওয়ার চেষ্টা করছে। এ কারণে ইরানের পরমাণু স্থাপনায় একাধিকবার হামলার হুমকি দিয়েছে ইসরায়েল। তবে সেক্ষেত্রে প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমের অন্য সমর্থকদের পক্ষ থেকে সবুজ সংকেত পায়নি তারা।

অবশ্য ইরান সব সময়ই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। তাদের দাবি, পরমাণু কমসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ, এতে পশ্চিমাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১২০৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।