কলকাতার পাশেই তৈরি করা হয়েছে পরিবেশবান্ধব স্মার্ট শহর নিউটাউন।
বিধাননগরের পাশে ১৯৯৯ সালে রাজারহাট নিউটাউন তৈরি করার জন্য প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমি অধিগ্রহণ শুরু করে সেই সময়ের বামফ্রন্ট সরকার।
সল্টলেক বা বিধাননগরে গড়ে ওঠে প্রথম আইটি হাব। পাঁচ নম্বর সেক্টরে আইটি হাবে আর জমি নেই। তাই নিউটাউনকেই বেছে নেওয়া হয়েছে আইটি হাব হিসেবে গড়ে তোলার জন্য।
সাড়ে ৩৫ বর্গকিলোমিটারের নিউটাউনে এখনো জায়গার অভাব নেই। অন্যদিকে নিউটাউন ইকোপার্কের ঠিক পাশেই ৫ তলা বাড়ির সমান উঁচু একটি সোলার ডোম তৈরির কাজ চলছে ২০১৬ সাল থেকে। আর কিছুদিনের মধ্যেই কাজ শেষ হবে। নিজের বিদ্যুৎ নিজেই তৈরি করবে ইকো পার্ক। বেঁচে যাওয়া বিদ্যুৎ গ্রিডে দেওয়া হবে।
দুই হাজারের বেশি সোলার প্যানেল লাগানো রয়েছে ৪৫ মিটার ব্যাসের এই গোলাকার ভবনের গায়ে, যা ঘণ্টায় ১৮০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।
সুদৃশ্য এই সোলার ডোমটি জনসাধারণের দেখার জন্য খুলে দেওয়া হবে। থাকবে সাইকেল, যা চালালে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে এবং উৎপাদিত বিদ্যুতের পয়েন্ট পরবর্তীকালে রিডিম করা যাবে।
এছাড়াও হিডকো ভবন সংলগ্ন কেষ্টপুর খালের ওপর সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে। এখান থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে। নিউটাউন শহরের কার্বন নিঃসরণ কমানোর আশায় আরও নানা জায়গায় সোলার প্যানেল বসানো হচ্ছে।
আবার বিশ্ব বাংলা তোরণের কাছেই নির্মিত হয়েছে ‘স্মার্ট স্ট্রিট’, সেখানে রয়েছে ৫টি ‘স্মার্ট ট্রি’। প্রতি ঘণ্টায় এক কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে যা গ্রিডে পাঠাবে। এর ফলে বার্ষিক ৭ টন কার্বণ নিঃসরণ কমবে।
স্মার্ট স্ট্রিটের পুরো পথটি নির্মিত হয়েছে রিসাইকেলড প্লাস্টিক দিয়ে। কলকাতায় এই ধরনের প্রয়োগ সম্ভবত প্রথম। সেখানে রয়েছে সোলার বেঞ্চ এবং তাতে পথচারীদের জন্য রাখা হয়েছে মোবাইল চার্জিং স্টেশন।
শহরে কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্য নিয়েই যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে সাইকেলকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। অ্যাকশন এরিয়া ওয়ানে অ্যাক্সিস মল ফ্লাইওভারের নিচে গড়ে তোলা হয়েছে এক অভিনব উন্মুক্ত ছবিঘর। পরিচালকরা অনুমতি নিয়ে এখানে তাদের সিনেমা দেখাতে পারবেন।
এছাড়া পথনাটক করার জন্যও জায়গা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে। পথের ধারে রাখা হয়েছে দাবা বোর্ড।
সুদৃশ্য দেওয়াল চিত্রের মাধ্যমে শহরের সাবওয়েগুলোকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। নারকেলবাগান মোড়ে আগেই তৈরি করা হয়েছে রবীন্দ্রতীর্থ। সেখানে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি ডিজিটালি ধরে রাখা আছে। এছাড়াও আর্ট গ্যালারি, মিনি সিনেমা হল, মিউজিক রুম এবং রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে গবেষণা করার ব্যবস্থা আছে।
ঐতিহ্য ধরে রেখে ট্রামের আদলে তৈরি করা হয়েছে একটি রেস্তোরাঁ। তার সঙ্গে রয়েছে শোলের পোস্টার। পুরনো দিনকে ধরে রাখার চেষ্টা এই আধুনিক শহরে। নারকেল বাগান মোড়ে বিশ্ববাংলা তোরণের ওপর ওঠার ব্যবস্থা রয়েছে, যেখানে রয়েছে একটি রেস্তোরাঁ। পাখির চোখে শহরের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে খাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে।
শীঘ্রই মেট্রোরেলও চালু হয়ে যাবে এই শহরে।
সূত্র: ডয়চে ভেলে
বাংলাদেশ সময়: ১৯১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২২
এনএসআর