ঢাকা, শনিবার, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

তুলা রফতানি বন্ধ প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ ভারত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৫৮, মার্চ ১০, ২০১২
তুলা রফতানি বন্ধ প্রশ্নে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ ভারত

ঢাকা : বিতর্কিত তুলা রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া প্রশ্নে ভারতের মন্ত্রীসভার বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক বির্তক ও সমালোচনার প্রেক্ষিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সিদ্ধান্তটি পুর্নবিবেচনার জন্য গত শুক্রবার এক বৈঠকের আহ্বান করেন।

কিন্তু অবশেষে কোনো ধরণের অগ্রগতি ছাড়াই বৈঠকটি শেষ হয়।

বৈঠকের ব্যাপারে ভারতের কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তা কিরন ধিনাগারা বলেন, ‘কোনো ধরনের নিষ্পত্তি ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। এ ব্যাপারে আরেো আলোচনা প্রয়োজন। ’ এছাড়া পরবর্তী বৈঠক খুব শিগগিরই অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান তিনি।

তবে শুক্রবারের বৈঠকে বলা হয়েছে-  ৪ মার্চের আগে কাস্টম ক্লিয়ারেন্স নিশ্চিত করা চালানগুলো রফতানি করা যাবে। ভারতীয় রফতানিকারকদের প্রায় ২০ লাখ বেল পাট রফতানির জন্য নিবন্ধিত হলেও এখনও জাহাজিকরণ সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। সরকারের হঠাৎ সিদ্ধান্তে এসব রফতানিকারকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।

তবে ৪ মার্চের আগে কাস্টম ক্লিয়ারেন্স নিশ্চিত করা চালানগুলো রফতানি করার ঘোষণায় তাদের শঙ্কা কিছুটা কেটে যাবে বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
 
এদিকে, সরকারের একটি সূত্র আভাস দিয়েছে ভারত সীমিত মাত্রায় তুলা রফতানির অনুমতি দিতে পারে। রফতানির জন্য পাওয়া পূর্বের অঙ্গীকারগুলো অক্ষুণ্ন রাখতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তারা।

অপরদিকে, বিশ্ববাজারে ভারতীয় তুলার সর্ববৃহৎ ক্রেতা চীন ভারতের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। চীনের তুলা আমদানিকারকরা ভারতের এই সিদ্ধান্তকে অবিবেচনাপ্রসূত আখ্যা দিয়ে বলেছে- এর ফলে বিশ্ববাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বিশ্ববাজারে ভারতীয় সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় ইতিমধ্যেই তুলার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভারত বিশ্বের ২য় সর্বোচ্চ তুলা উৎপাদনকারী রাষ্ট্র। তারা অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবেই গত সোমবার তুলা রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। দেশের বস্ত্র শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় তুলার মজুদ নিশ্চিত করতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই পদক্ষেপ নেয় বলে জানায় সংবাদমাধ্যম।

তবে বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলে তা বিশ্ব বাজারকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দেবে।

এদিকে, এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ইতিমধ্যে ভারতের তুলা উৎপাদনকারীরা তাদের তীব্র আপত্তির কথা জানিয়েছেন। কারণ এর ফলে তারা তাদের উৎপাদিত ফসলের উপযুক্ত মূল্যপ্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবেন।

এর আগে ভারতের কৃষিমন্ত্রী শারদ পাওয়ারও সরকারকে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এর ফলে ভারতের তুলা উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত বিপুল সংখ্যক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এদিকে, ভারতের রফতানি বন্ধের ঘোষণায় সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্ববাজারে তুলার দাম বেড়ে যাওয়ার একচেটিয়া ফায়দা এখন তারা গ্রহণ করবে বলে বিশ্লেষকরা জানান।

বাংলাদেশ সময় : ১৪৩২ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।