ঢাকা, শনিবার, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

আন্তর্জাতিক

তামাক থেকে চীনের আয় এইচএসবিসি-ওয়ালমার্টের চেয়েও বেশি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:২২, মার্চ ১০, ২০১২
তামাক থেকে চীনের আয় এইচএসবিসি-ওয়ালমার্টের চেয়েও বেশি!

ঢাকা: চীনের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল টোব্যাকো কর্পোরেশন তামাক থেকে যে পরিমাণ আয় করে তা এইচএসবিসি এবং ওয়ালমার্টের সম্মিলিত আয়কেও ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাংক কোম্পানি লি. এর প্রকাশিত সাম্প্রতিক তথ্য উপাত্ত দেখে এমন ধারণা করা হচ্ছে।

তাদের তথ্য মতে, ২০১০ সালে তামাক বিক্রি থেকে চীনের নেট আয় হয়েছে এক হাজার ৮শ’ ৭০ কোটি মার্কিন ডলার।

ব্যবসা-বাণিজ্যের ইন্টারনেট সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ২০১১ অর্থবছরে এইচএসবিসি লাভ করেছে এক হাজার ৬শ’ ৮০ কোটি ডলার। অন্যদিকে ওয়ালমার্ট লাভ করেছে এক হাজার ৫শ’ ৭০ কোটি ডলার। তবে একই সময়ে চীনের ন্যাশনাল টোব্যাকো কর্পোরেশনের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি।

ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাংক কোম্পানি লি. সম্প্রতি তামাক থেকে আয়ের এই তথ্য প্রকাশ করেছে কারণ ন্যাশনাল টোব্যাকো কর্পোরেশন সাংহাইয়ের শেয়ার বাজারে তালিকাভূক্ত ব্যাংকের ৫শ’ ২০ কোটি ইউয়ানের শেয়ার কিনতে যাচ্ছে।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানটি ২০১০ সালে মুনাফার দিক থেকে বিশ্বের বৃহৎ তিনটি তামাকজাত পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফিলিপ মরিস ইন্টারন্যাশনাল, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো এবং আলট্রিয়া গ্রুপের মিলিত মুনাফাকেও ছাড়িয়ে গেছে বলে জানা যায়।

ন্যাশনাল টোব্যাকো করপোরেশন তামাক বা তামাকজাত পণ্য রপ্তানি করে প্রচুর আয় করে। তাছাড়া তাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে ভোক্তার সংখ্যাও কম নয়।

২০১০ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ডব্লিউএইচও’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনে প্রায় ৩৫ কোটি ধূমপায়ী রয়েছে। এরমধ্যে ৫৭ দশমিক ৪ শতাংশ পুরুষ আর ২ দশমিক ৬ শতাংশ নারী। এর ঐতিহাসিক কারণ হিসেবে বলা হয়, চীনা পুরুষরা তামাক সেবনকে পৌরুষত্বের প্রতীক বলে মনে করে। সেখানে জাতীয় নেতা মাও সে তুং, জিয়াওপিংকে প্রায়ই জ্বলন্ত সিগারেট হাতে চিত্রিত করা হয়।

২০০৫ সালের ১১ অক্টোবর ডব্লিউএইচও’র টোব্যাকো নিয়ন্ত্রণ সনদে অনুসমর্থন দিয়েছে চীন। এর পর ২০১১ সালের মার্চে তারা জনসমক্ষে ধূমপান নিষিদ্ধ করেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় স্কুলে ধূমপান নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন গাইডলাইন দিয়েছে। স্কুল ও কিন্ডারগার্টেনকে ধূমপান মুক্ত করার জন্য ২০১১ সালের জুনে তারা আইন করেছে।

২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রেডিও, টেলিভিশনে তামাকজাত পণ্যের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ বিজ্ঞাপন দেখানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

তামাক সেবনে এতোসব পদক্ষেপ নিলেও চীনে কিন্তু ধূমপান খুব একটা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এখনো প্রতি বছর এক লাখ মানুষ তামাক সেবনজনিত সমস্যায় মারা যায়। একারণে সরকারের প্রতিরোধ ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর হচ্ছে না বলে মনে করছেন অনেকে।

আবার সরকারের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। ব্লুমবার্গের তথ্য মতে, গত বছর চীন সরকার তামাকজাত পণ্য থেকে সাড়ে ৯ হাজার কোটি বা তারও বেশি রাজস্ব পেয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।