ঢাকা : বিখ্যাত কোরীয় অভিনেত্রী কিম হাই জা এখন নিজেকে গর্বিত মনে করতেই পারেন তার ভালোকাজের সুফল দেখে। তার সেই ভালোকাজের ফলস্বরূপ এক বাংলাদেশি তরুণ এখন সিউলের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি মাসের শুরুতে স্নাতক অধ্যায়ন শুরু করেছে।
২৬ বছর বয়সী সৌভাগ্যবান বাংলাদেশি যুবক জেমস রানা বৈদ্যকে কিম পড়াশোনার খরচ যোগাচ্ছেন সেই ১৯৯৭ সাল থেকেই। চলতি মার্চের ৫ তারিখ থেকে সিউলের কিউনঘি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যান প্যাসিফিক গ্র্যাজুয়েট স্কুলে তার স্নাতকের অধ্যায়ন শুরু হয়েছে। কিমের সঙ্গে সঙ্গে তার পড়াশোনার খরচে পৃষ্ঠপোষকতা করছে কোরিয়াভিত্তিক এনজিও ওয়ার্ল্ড ভিশন কোরিয়া।
ওয়ার্ল্ড ভিশন কোরিয়া জানিয়েছে, জেমস বৈদ্য কিউনঘি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনা শুরু করেছেন। এর মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সহযোগিতার জন্য একটি আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা গঠনে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে সে একধাপ এগিয়ে যাবে।
১৫ বছর আগে জেমস বৈদ্য যখন ১১/১২ বছর বয়সী, তখন থেকেই কিম তার পড়াশোনায় পৃষ্ঠপোষকতা শুরু করেন। ওই সময়টায় প্রাথমিক বিদ্যালয় পাঠ শেষ করার পর জেমস বৈদ্যর আর পড়াশোনা করার সামর্থ্য ছিল না।
পরবর্তীতে কিমের পৃষ্ঠপোষকতায় বৈদ্য শুধুমাত্র তার উচ্চ মাধ্যমিকই শেষ করেনি, বরং উচ্চতর শিক্ষার জন্য দেশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃতত্ব বিভাগে ভর্তি হতেও সক্ষম হয়।
তার আজীবনের ইচ্ছা বাংলাদেশের অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা ও সুযোগ সৃষ্টি করতে কোরিয়ার মডেলে উন্নয়ন পরিকল্পনার ওপর অধ্যয়ন করা।
তবে কিমের পৃষ্ঠপোষকতায় বৈদ্য গত ১৫ বছর পড়াশোনা চালিয়ে গেলেও তাদের দুজনের প্রথম দেখা হয় গত নভেম্বরে কোরিয়ার রাজধানী সিউলে। এর কিছুদিন আগে কিমের ফেসবুক ওয়ালে জেমস লিখে রেখেছিলো, সে তার কোরীয় মাকে দেখতে আগ্রহী। আর বাংলাদেশি পুত্রের এই ডাকে সাড়া না দিয়ে পারেননি কিম। বৈদ্যকে কোরিয়া নেওয়ার ব্যবস্থা করেন কিম।
১৯৯১ সাল থেকে ওয়ার্ল্ড ভিশনের গুডউইল অ্যামবাসেডর হিসেবে কাজ শুরু করা কিম উগান্ডা, আফগানিস্তান, লাইবেরিয়া এবং পাকিস্তানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ ভ্রমণে গেছেন।
এর পাশাপাশি বৈদ্যসহ এ পর্যন্ত সারা বিশ্বজুড়ে প্রায় ১০৩ শিশুকে পড়াশোনার খরচ জুগিয়ে যাচ্ছেন কিম।
ওয়ার্ল্ড ভিশন কোরিয়া হচ্ছে একটি খ্রিস্টান ত্রাণ, উন্নয়ন এবং পরামর্শদাতা সংস্থা যারা লন্ডনভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ভিশন ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে।
বাংলাদেশ সময় : ২০৫৭ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১২
সম্পাদনা : রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর/আহ্সান কবীর, আউটপুট এডিটর