ঢাকা : খরা এবং আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার কারণে আরব বিশ্বের অর্থনৈতিক অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি করেছেন আরব নেতারা। মঙ্গলবার ইরাকের রাজধানী বাগদাদে শুরু হওয়া আরব লিগের বার্ষিক সম্মেলনে অংশ নিয়ে আরব বিশ্বের নেতারা এ মনোভাব ব্যক্ত করেন।
২১টি আরব দেশের নেতারা ইরাকের রাজধানী বাগদাদে অনুষ্ঠিত আরব লিগের এই ঐতিহাসিক বার্ষিক সম্মেলনে মিলিত হন। গত শতাব্দীর ’৯০ দশকের প্রারম্ভে সাবেক ইরাকি শাসক সাদ্দাম হোসেনের কুয়েত আক্রমণের পর ইরাকে এই প্রথম আরব লিগের কোনো সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলো।
তবে এবারের সম্মেলনের চিত্রপট আগের বছরগুলোর থেকে কিছুটা আলাদা বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। পূর্বের সম্মেলনগুলোর অনেক পরিচিত মুখ এবারের সম্মেলনে উপস্থিত নেই। তিউনিসিয়ার বেন আলী ক্ষমতাচ্যুত। লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি নিহত। মিসরের হোসনি মোবারক কারা প্রহরে বিচারের সম্মুখীন। এছাড়া সিরিয়ার বাশার আল আসাদও পতনের দ্বারপ্রান্তে।
মধ্যপ্রাচ্যের ক্ষমতার মানচিত্রের এই ঐতিহাসিক পট পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে এবারের সম্মেলনের গুরুত্ব অনেক বেশি বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
অন্য অঞ্চলগুলো অপেক্ষাকৃত স্থিতিশীল হলেও সিরিয়ায় চলমান বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্যেই আরব লিগের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এবারের আরব লিগ সম্মেলন ইরাকে অনুষ্ঠিত হওয়ার তাৎপর্যও কিছুটা ভিন্ন। বাগদাদে এই সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে ইরাকের বর্তমান শিয়া প্রাধান্য বিশিষ্ট সরকার আশা করছে তারা সুন্নি প্রধান আরব বিশ্বে তাদের অবস্থান ও গ্রহণযোগ্যতাকে অধিকতর পোক্ত করতে পারবেন।
সম্মেলন পণ্ড করতে ইরাকি সুন্নি চরমপন্থিদের অব্যাহত হুমকির মধ্যেই সম্মেলন শুরু হয়। সম্মেলনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যেই ইরাকি সরকার রাজধানী বাগদাদকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়িয়ে ফেলেছে। হাজার হাজার সেনা ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে সমগ্র বাগদাদ জুড়ে।
কিন্তু এর মধ্যে রাজধানী বাগদাদের একটি তল্লাশিচৌকিতে মঙ্গলবার আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন এক পুলিশ কর্মকর্তা এবং আহত হয়েছেন আরো চারজন।
সম্মেলনের প্রথম দিন আরব দেশগুলোর অর্থমন্ত্রীরা পর্যটন খাত প্রসারে পারস্পরিক সহযোগিতার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। এছাড়া এই অঞ্চলে দিন দিন হুমকি হয়ে ওঠা বিশুদ্ধ পানির স্বল্পতা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় এক সঙ্গে কাজ করার ব্যাপারেও ঐক্যমতে পৌঁছেছেন তারা।
এই সম্মেলন আয়োজন করতে ইরাক সরকার প্রায় ৫০ কোটি ডলার খরচ করেছে। তবে ইরাকি কর্তৃপক্ষ মনে করছেন ইরাকের ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্যই এই বিনিয়োগ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময় : ১১৪০ ঘণ্টা, মার্চ ২৮, ২০১২
সম্পাদনা: রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর