ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

জুমাতুল বিদা ও আল কুদস দিবস

মোশারেফ হোসেন পাটওয়ারী, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৫
জুমাতুল বিদা ও আল কুদস দিবস ছবি: রাজিব / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

১২ মাসের সর্বশ্রেষ্ঠ মাস রমজানুল মোবারক। সপ্তাহের সর্বশ্রেষ্ঠ দিন জুমার দিন।

আর রমজান মাসের একটি জুমার দিন মানে এক শ্রেষ্ঠর সঙ্গে আরেক শ্রেষ্ঠর সম্মিলন। এ দিনে রমজানুল মুবারকের পাশাপাশি জুমার শেষ ১০ দিনের অতিরিক্ত বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদা রয়েছে। এ দৃষ্টিকোণ থেকে ‘জুমাতুল বিদা’ সম্মান ও শ্রেষ্ঠত্বের দিক দিয়ে নিঃসন্দেহে অপরাপর জুমার তুলনায় অনেকগুণ বেশি।

রমজান মাসের শেষ জুমার দিনই মুসলিম বিশ্বে ‘জুমাতুল বিদা’ নামে পরিচিত। জুমাতুল বিদার গুরুত্ব অনুধাবন করার জন্য দুটো বিষয় আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন।
এক. মাহে রমজানের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য।

দুই. সপ্তাহের ভেতরে জুমার দিনের মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য।

রমজান পবিত্র কোরআন মজিদ অবতীর্ণ হওয়ার মাস। এ মোবারক মাসেই রাসূল (সা.)-কে নবুওয়ত ও রিসালাতের মাধ্যমে সম্মানিত করা হয়েছে। এ মাসেই একটি বরকতময় রজনী রয়েছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। আর শুক্রবার মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদ। এ দিবসে এমন একটি সময় আল্লাহ রেখে দিয়েছেন, যা দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ মুহূর্ত। জুমার নামাজের গুরুত্ব সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! শুক্রবার দিন যখন নামাজের জন্য ডাকা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে (খুতবা ও নামাজের) ছুটে আস এবং বেচাকেনা বন্ধ করো। এটা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। যদি তোমরা বুঝতে পারো।

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শুক্রবার সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিবস এবং জুমার নামাজ আদায়ে অশেষ সওয়াব ও নেয়ামত। তিনি আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি অকারণে তিন জুমা নামাজ কাজা করেন- তিনি যেন পবিত্র ইসলামকে অবজ্ঞা করলেন, আর তার অন্তরে মরিচা পড়ে গেল।

মহানবী (সা.) এক জুমার দিনে ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুসলিমগণ! এ দিনকে আল্লাহপাক ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন। সুতরাং এ দিনে গোসল করো এবং যার কাছে সুগন্ধি রয়েছে সে সুগন্ধি ব্যবহার করো আর অবশ্যই এ দিনে মেসওয়াক ব্যবহার করো। ‍

জুমাতুল বিদার আরেকটি বিশেষ তাত্পর্য এই যে, এ রমজান মাসের শেষ শুক্রবার হজরত দাউদ (আ.) জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠা করেন এবং সেখানে গড়ে তোলেন মসজিদে আল আকসা বা বায়তুল মোকাদ্দাস, যা বায়তুল্লাহ ও মসজিদে নববীর পর তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। তাই প্রতিবছর রমজান মাসের শেষ শুক্রবার বিশ্বের সব মুসলমান বায়তুল মোকাদ্দাসে ইহুদিদের অবৈধ দখলের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করে থাকে এবং ইসরাইলের দখল থেকে পবিত্র ভূমি মুক্ত করার শপথ গ্রহণ করে। এ জন্য রমজান মাসের শেষ শুক্রবারকে আল কুদস দিবসও বলা হয়।

একে একে আমরা রহমত, মাগফিরাত ও ক্ষমার তিন ধাপই অতিক্রম করতে চলেছি। আমরা মাহে রমজানের অতীব গুরুত্বপূর্ণ জুমাতুল বিদা আদায় করতে যাচ্ছি। আমাদের এখন হিসাব-নিকাশ মেলানো দরকার, অর্জনের পবিত্র এ মাসে আমরা কতটুকু অর্জন করতে পেরেছি। নাকি যে তিমিরে ছিলাম সে তিমিরেই রয়ে গেছি! মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সবাইকে ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে জুমাতুল বিদার খায়ের ও বরকত হাসিল করার তওফিক দান করুন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৭, ২০১৫
এমএ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।