ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

৪১৯ যাত্রী নিয়ে ছাড়লো প্রথম হজ ফ্লাইট

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৫৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৫
৪১৯ যাত্রী নিয়ে ছাড়লো প্রথম হজ ফ্লাইট ছবি: রাজিব / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ৪১৯ জন যাত্রী নিয়ে সৌদি আরবের জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে গেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চলতি মৌসুমের প্রথম হজ ফ্লাইট।

রোববার (১৬ আগস্ট) সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে বিজি-১০১১ ফ্লাইটটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জেদ্দার উদ্দেশে উড্ডয়ন করে।



বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে উদ্বোধনী হজ ফ্লাইটের যাত্রীদের বিদায় জানান।

রোববারই হজ ফ্লাইট বিজি-৩০১১ দুপুর আড়াইটায় ৪১৯ জন, বিজি-৫০১১ রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে ৪১৯ জন এবং শিডিউল ফ্লাইট বিজি-০০৩৫ রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে জেদ্দার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বে।

নির্ধারিত সময়ে নির্বিঘ্নে হজ ফ্লাইট পরিচালনার সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।

চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকেও এ বছর যথারীতি প্রয়োজনীয় সংখ্যক হজ-ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।

গত বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর আশকোনায় হজ-ক্যাম্পে হজ কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

এ বছর হজ-ফ্লাইট  ও শিডিউল ফ্লাইটে মোট ৫১ হাজার মুসলমান হজ পালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে সৌদি যাবেন। এসব হজ-যাত্রীদের ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে পারাপারের জন্য বিমান ইতোমধ্যেই নিজস্ব সুপরিসর বোয়িং ট্রিপল সেভেন উড়োজাহাজ প্রস্তুত রেখেছে। ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে চলাচলকারী বিমানের নিয়মিত ফ্লাইটেও কিছু হজ-যাত্রী পবিত্র ভূমিতে যাবেন।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) খান মোশাররফ হোসেন বৃহস্পতিবার এক বার্তায় বলেন, পবিত্র হজের গুরুত্ব ও ধর্মপ্রাণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বিমান বাংলাদেশ একটি সর্বাঙ্গ-সুন্দর হজ কার্যক্রম পরিচালনায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

বাংলাদেশ থেকে প্রায় এক লাখ এক হাজার ৭৫৮ জন পবিত্র হজব্রত পালনে সৌদি আরব যাবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন মোট দুই হাজার ৬০০ জন। অবশিষ্ট ৯৯ হাজার ১৫৮ জন যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ বছর বিমানে যাবেন মোট ২ হাজার ৫৭৫ জন হজ-যাত্রী, অবশিষ্ট ৪৮ হাজার ৪২৫ জন যাবেন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়।

ঢাকা-জেদ্দা-ঢাকা রুটে হজ-যাত্রীদের ইকোনমি ক্লাসে বিমান ভাড়া এক হাজার ৫১৫ মার্কিন ডলার এবং বিজনেস ক্লাসে বিমান ভাড়া দুই হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে যোগ হবে অন্যান্য কর। ঢাকা থেকে জেদ্দা রুটের প্রতি ফ্লাইটের উড্ডয়নকাল হবে আনুমানিক সাত ঘণ্টা।  

খান মোশাররফ হোসেন জানান, দুই মাসব্যাপী হজ-ফ্লাইট পরিচালনায় শিডিউল ফ্লাইটসহ মোট ২৮৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে, যার মধ্যে ২২৪টি ‘ডেডিকেটেড’ এবং ৬১টি শিডিউল ফ্লাইট। ১৬ আগস্ট থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ‘প্রি-হজ’-এ (হজের আগে) মোট ১৪৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে  (ডেডিকেটেড-১১৫ এবং শিডিউল-৩০)।

‘পোস্ট-হজ’-এ (হজের পর) ১৪০টি ফ্লাইট চলবে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত (ডেডিকেটেড-১০৯ এবং শিডিউল-৩১)। সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুই হাজার ৫৭৫ যাত্রীসহ মোট ৫১ হাজার যাত্রী হজ পালনের জন্য ক্যারিয়ার হিসেবে বিমানকে ব্যবহার করবেন। হজ-ফ্লাইট পরিচালনার জন্য বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা-জেদ্দা উভয় স্থানেই বিশেষ ব্যবস্থার আয়োজন করেছে।

প্রত্যেক হজ-যাত্রী বিনামূল্যে সর্বাধিক দুই পিস করে ৩২ কেজি মালামাল বিমানে ও বিজনেস ক্লাসের জন্য সর্বাধিক দুই পিস ৪২ কেজি এবং কেবিন ব্যাগেজে সাত কেজি মালামাল সঙ্গে নিতে পারবেন।

কোনো অবস্থাতেই প্রতি প্রিস ব্যাগেজের ওজন ২৫ কেজির বেশি হতে পারবে না। প্রত্যেক হজ-যাত্রীর জন্য ৫ লিটার জমজমের পানি ঢাকায় নিয়ে আসা হবে এবং হাজীরা ঢাকা ফেরত আসার পর তাদের তা দেওয়া হবে। হাজীরা সঙ্গে করে বিমানে পানি বহন করতে পারবেন না।

যে কোনো ধারালো বস্তু যেমন- ছুরি, কাঁচি, নেইল কাটার, ধাতব নির্মিত দাঁত খিলন, কান পরিস্কারক, তাবিজ ও গ্যাস জাতীয় বস্তু যেমন- এ্যারোসল এবং ১০০ (এম এল)-এর বেশি তরল পদার্থ হ্যান্ড ব্যাগেজে বহন করা যাবে না।

নতুন নিয়ম অনুযায়ী হাজীদের কষ্ট লাঘব করার উদ্দেশে ফিরতি ফ্লাইটের (জেদ্দা থেকে বাংলাদেশ) ব্যাগেজ জেদ্দা এয়ারপোর্ট এ চেক্-ইন এর সময় বিমানে গ্রহণ করা হবে না।

পরিবর্তে এই ব্যাগেজ আগেই মক্কা ও মদিনায় বিমান নির্ধারিত স্থানে ও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা দিতে হবে, যা বিমানের ব্যবস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট হাজীদের বহনকারী ফ্লাইটেই পরিবহন করা হবে।

বিমান কর্তৃক পরিচালিত ডেডিকেটেড হজ-ফ্লাইট সমূহের চেক-ইন, ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা প্রতিবারের মতো এবারও হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন হজ ক্যাম্পেই সম্পন্ন করা হবে। তবে শিডিউল ফ্লাইটের হজ-যাত্রীদের যাত্রাপূর্ব আনুষ্ঠানিকতা যথানিয়মে বিমানবন্দরে সম্পন্ন করা হবে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদি এয়ারলাইন্স হজ-যাত্রীদের ঢাকা-জেদ্দা রুটে আনা-নেওয়া করবে। ১৯৭৩ সাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত আট লাখ ২৮ হাজার ৩৮৭ জন হজ-পালনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সেবা গ্রহণ করেছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৭ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৫
এমএন/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।