ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

হজের বিভিন্ন আমলের ফজিলত- ০২

হারাম শরিফে নামাজ ও তাওয়াফের ফজিলত

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৫
হারাম শরিফে নামাজ ও তাওয়াফের ফজিলত

পবিত্র মক্কা মুকাররমা সৌদি আরবের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এটা মুসলমানদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র তীর্থভূমি।

সেখানে রয়েছে মসজিদে হারাম, পবিত্র কোরআন নাজিলের মাঠ-ময়দান-মরু-পাহাড়-গ্রাম। সেখানকার আকাশে-বাতাসে মিশে আছে শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর নানা স্মৃতি।

মক্কাকে বলা হয়, মসজিদে হারাম, বাক্কা, উম্মুল কুরা, বায়তুল আতিক, মায়াদ, আল বালাদ, আল বালাদুল আমিন, করিয়া, ওদি, তিহামা প্রভৃতি।

নামাজের কেবলা পবিত্র কাবাঘর বায়তুল্লাহ। সেদিকে ফিরে মুসলমানরা নামাজ আদায় করেন। মদিনা মুনাওয়ারা থেকে ৪০০ কিলোমিটার দক্ষিণে মক্কা। তায়েফ থেকে প্রায় ৯০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে, সৌদির সবচেয়ে বড় বন্দরনগরী জেদ্দা ও লোহিত সাগর থেকে ৭২ কিলোমিটার পূর্বে এর অবস্থান।

প্রায় ২০ লাখ লোকের বসবাস এখানে। এছাড়া হজযাত্রী ও ওমরাকারীদের ভিড় সবসময় লেগেই থাকে।

হজরত নুহ (আ.)-এর মহাপ্লাবনের পর সর্বপ্রথম হজরত ইবরাহিম (আ.) সপরিবারে মক্কায় এসেছিলেন। তখনই থেকেই সূচিত হয়েছে এখানে মানব বসতি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৭৭ মিটার উচ্চতায় পবিত্র মক্কানগরী। আয়তন প্রায় ৮৫০ বর্গকিলোমিটার। বসবাসযোগ্য ৮৮ বর্গকিলোমিটার, বাকি এলাকা পাহাড়-পর্বত, মরুপ্রান্তর। ৬ বর্গকিলোমিটার আয়তনের মসজিদে হারাম পবিত্র মক্কার প্রাণকেন্দ্র।

পবিত্র কোরআনে কারিমে মক্কা ও মক্কার প্রসিদ্ধ পাহাড় সাফা-মারওয়ার কথা বলা হয়েছে। হাদিসেও মক্কা মুকাররমার অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।

মক্কা মুকাররমার ফজিলত
সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আদি ইবনে হামরা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ‘হাযওয়ারা’ নামক স্থানে ছিলেন তখন তাকে উটের ওপর সওয়ার অবস্থায় বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, আল্লাহর কসম! নিশ্চয়ই তুমি আল্লাহর শ্রেষ্ঠ জমিন। আর আমার কাছে সবচেয়ে প্রিয়। আল্লাহর কসম! যদি আমাকে তোমার (বুক) থেকে চলে যেতে বাধ্য না করা হতো তাহলে আমি কখনও যেতাম না। -সুনানে ইবনে মাজা

আরেক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেন, নিশ্চয়ই আসমান-জমিন সৃষ্টির দিনই আল্লাহ এই জমিনকে হারাম বা সম্মানিত করেছেন। সুতরাং কিয়ামত পর্যন্ত তা হারাম ও সম্মানিত। সহিহ মুসলিম

মসজিদে হারামে নামাজ আদায়ের ফজিলত
বিশিষ্ট সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, শুধু তিনটি মসজিদের উদ্দেশে সফর করা যাবে- আমার এই মসজিদ (মসজিদে নববী), মসজিদে হারাম ও মসজিদে আকসা। -সহিহ মুসলিম

অন্য আরেক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত জাবির (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আমার এই মসজিদে একটি নামাজ অন্য মসজিদে হাজার নামাজ থেকেও উত্তম। তবে মসজিদে হারাম ছাড়া। কেননা, মসজিদে হারামে একটি নামাজ অন্য মসজিদের এক লাখ নামাজের চেয়ে উত্তম। -মুসনাদে আহমদ

বাইতুল্লাহর তাওয়াফের ফজিলত
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করে এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করে সে একটি গোলাম আজাদ করার সওয়াব পাবে। -ইবনে মাজা

অন্য বর্ণনায় হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, বাইতুল্লাহর তাওয়াফ হচ্ছে নামাজের মতো। তবে এতে তোমরা কথা বলতে পার। সুতরাং এ সময় যে কথা বলবে সে যেন শুধু উত্তম কথাই বলে। -জামে তিরমিজি

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘন্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৫
এমএ/

** হজের সফরে খরচের প্রতিদান ব্যয় অনুপাতে প্রদান করা হবে
** হজযাত্রীদের জন্য যা জানা জরুরি
** মক্কা শরিফের দর্শনীয় কিছু স্থান
** কবুল হজের জন্য যে আমল বেশি বেশি করা দরকার
** হজ ফরজ হওয়ার শর্ত ও প্রকারসমূহ
** বদলি হজ আসলে কী?

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।