ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

সৎ প্রার্থী নির্বাচিত করা ইসলামের নির্দেশ

এহসান বিন মুজাহির, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
সৎ প্রার্থী নির্বাচিত করা ইসলামের নির্দেশ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম/ফাইল ফটো

ভোট একটি পবিত্র আমানত। আমানত যোগ্য ব্যক্তির কাছে অর্পণ করা ঈমানি দায়িত্ব।

ভোটের ব্যাপারটি শুধুমাত্র পার্থিব নয়; পরকালেও এ ব্যাপারে আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে। জনগণের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে আদর্শবান, সৎ ও খোদাভীরু প্রার্থীর কাছে ক্ষমতা অর্পণ করার লক্ষ্যে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করা প্রত্যেক ভোটারের নৈতিক দায়িত্ব।

বর্তমান যুগে জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার জন্য ভোট অন্যতম একটি মাধ্যম। নির্বাচিত প্রতিনিধি শুধু ভোটদাতার সঙ্গে নয়, পুরো জাতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। সৎ, যোগ্য, আদর্শবান না হলে তাকে ভোট দেওয়া আর তার ব্যাপারে মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়ে সত্যায়ন করা একই কথা। অর্থ্যাৎ কোনো নির্বাচনী এলাকায় ভালো, সৎ ও দ্বীনদার লোককে প্রার্থী করা হলে তাকে ভোট না দিয়ে বিরত থাকা অসৎ ও অযোগ্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করা ইসলামের দৃষ্টিতে মারাত্মক গোনাহের কাজ।

সৎ প্রার্থী বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা না থাকলেও সৎ প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে, নতুবা আমানতের খিয়ানত হবে। আপনার ভোটে নির্বাচিত প্রার্থী কোনো ভালো কাজ করবেন তার সওয়াব ভোটদাতা হিসেবে আপনি পাবেন। তদ্রুপ আপনার ভোটে নির্বাচিত প্রার্থী কোনো খারাপ কাজ করলে, পাপের কাজ করলে; ওই প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করার জন্য হাশরের কঠিন মুহূর্তে আল্লাহতায়ালার দরবারে অাপনাকেও জবাবদিহি করতে হবে।

যেহেতু ভোট একটি সাক্ষ্য। আর ভোটার হিসেবে আপনি সাক্ষ্য দিচ্ছেন। তাই ইসলামের এই নির্দেশনা। এ প্রসঙ্গে কোরআন কারিমে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘যে লোক সৎকাজের জন্য কোনো সাক্ষ্য দিবে, তা থেকে সেও একটি অংশ পাবে। আর যে লোক মন্দ কাজের জন্য সুপারিশ করবে, সে তার পাপের একটি অংশ পাবে। ’ -সূরা নিসা: ৮৫

আল্লাহতায়ালা আরও ইরশাদ করেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাক এবং ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্যদান কর, তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয় তদাপিও। ’ -সূরা নিসা: ১৩৫

কোরআনে কারিমে আরও ইরশাদ হচ্ছে, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে ন্যায় সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে অটল থাকবে এবং কোনো সম্প্রদায়ের আক্রোশের কারণে কখনও ন্যায়বিচার পরিত্যাগ করো না। ’ -সূরা মায়েদা: ৮

উল্লেখিত অায়াতের নির্দেশের ওপর ভিত্তি করে বলা চলে, যোগ্যতার মানদন্ডে যে প্রার্থী যোগ্য নন, কিংবা অসৎ কিংবা ওয়াদা ভঙ্গকারী- প্রার্থীকে ভোট দেওয়া হারাম।

এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, ‘তোমরা মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান থেকে বিরত থাক। ’ -সূরা হজ: ৩০
 
হাদিসেও হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতকে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করা থেকে সতর্ক করেছেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘সাবধান ! মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া সর্বাপেক্ষা বড় গুনাহ। ’ –সহিহ বোখারি

হজরত আয়মান বিন আখরাম রাজিয়াল্লাহু আনহু বলেন, একদিন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবায় দাঁড়িয়ে বললেন, ‘হে লোক সকল! মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া আর আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা একই রকম। ’ –তিরমিজি: ২২৯৯



বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।