ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

মুসলিম অভিবাসীর পা ধুয়ে দিলেন পোপ

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩২ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৬
মুসলিম অভিবাসীর পা ধুয়ে দিলেন পোপ

এবারের ইস্টার সানডেতে এক অনন্য ও মানবিক উদাহারণ সৃষ্টি করলেন পোপ ফ্রাঁন্সিস। ইতালির এক শহরে মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী কয়েকজন অভিবাসীর পা ধুয়ে দিলেন পোপ ফ্রাঁন্সিস।

এ সময় তাদের পায়ে চুম্বনও করেন ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের সর্বোচ্চ এই ধর্মীয় নেতা।

বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলার পর চলমান মুসলিমবিরোধী প্রবণতার মাঝে পোপের এই উদার আচরণ ভ্রাতৃত্বের বার্তা নিয়ে এসেছে বলে মনে করছেন অনেকে। পোপের কাজটিকে নিঃসন্দেহে অসাধারণ এবং দৃষ্টান্তমূলক ও মানবিক বলতে কেউ কসুর করছেন না। অভিবাসীদের দুর্দশার দিকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তিনি এই ধর্মীয় কর্মসূচীর আয়োজন করেন।

দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ইতালির রাজধানী রোমের নিকটবর্তী শহরতলি ক্যাসতেলনুয়োভো ডি পোর্তোতে এক শরণার্থী শিবিরে ইস্টার সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এমনটি করেছেন পোপ ফ্রাঁন্সিস।

এ সময় পোপ বলেন, ‘আমাদের আলাদা আলাদা ধর্ম ও সংস্কৃতি রয়েছে। কিন্তু আমরা সবাই ভাই ভাই এবং সবাই শান্তিতে বাস করতে চাই। ’ পোপের এমন বক্তব্যের পর অনেক শরণার্থীই কান্নায় ভেঙে পড়েন। এরপর পোপ তাদের সবার সামনে হাঁটু গেড়ে বসেন এবং পিতলের কলস থেকে পানি ঢেলে তাদের পা ধুয়ে দিয়ে মুছে দেন এবং তাদের পায়ে চুম্বন করেন।

পা ধুয়ে দেওয়ার এই আচার ভ্যাটিক্যানের পক্ষ থেকে দীর্ঘদিন ধরেই পালন করে আসা হচ্ছে। তবে যিশুর ১২ সঙ্গীর কথা মাথায় রেখে পোপ ফ্রাঁন্সিসের দায়িত্ব গ্রহণের পূর্ব পর্যন্ত কেবল ১২ জন ক্যাথলিক পুরুষের পা ধুয়ে দিতেন পোপরা।

২০১৩ সালে পোপ ফ্রাঁসিস পোপের দায়িত্ব গ্রহণের পর এক অনুষ্ঠানে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের পা-ও ধুয়ে দেন। আর কেবল ক্যাথলিক নয়, মুসলিমদের ক্ষেত্রেও তিনি এ ধর্মীয় আচার চালু করেন।

বৃহস্পতিবার পোপ আটজন পুরুষের পাশাপাশি চারজন নারীর পা ধুয়ে দেন। পুরুষদের মধ্যে চারজন ছিলেন নাইজেরিয়ার ক্যাথলিক; তিনজন ছিলেন মালি, সিরিয়া ও পাকিস্তানের মুসলিম ও ভারতের একজন হিন্দু। অনুষ্ঠানে পোপ স্পষ্টভাবেই বলেন, ‘মুসলিম, হিন্দু, ক্যাথলিক, প্রোটেস্ট্যান্ট বা যে কোনো ধর্মই হোক না কেন, সব ধর্মের অনুসারীরাই এক। আমরা সবাই ভাই ভাই, একই ঈশ্বরের সন্তান। আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে শান্তিতে বাঁচতে চাই। ’

২০১৩ সালের ১২ মার্চ বিশ্বের ১২০ কোটির বেশি রোমান ক্যাথলিকের ধর্মীয় নেতা নির্বাচিত হন আর্জেন্টিনার হোর্হে মারিও বেরগোলিও। রোমান ক্যাথলিক চার্চের ইতিহাসে দীর্ঘ ১৩শ বছর পর ইউরোপের বাইরে থেকে তিনি নির্বাচিত হন। পোপ হিসেবে তিনি নাম নেন প্রথম ফ্রাঁন্সিস, যে ফ্রাঁন্সিস পরিচিত হয়ে আছেন দরিদ্রবান্ধব, সহজ-সরল জীবনযাপন ও বিনয়ের প্রতীক হিসেবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৫ ঘণ্টা, ২৭ মার্চ ২০১৬
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।