সর্বশেষ গত ২৮ থেকে ৩০ মার্চ হজ নিবন্ধনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এর মধ্যে নিবন্ধন কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় এই সময় ১০ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) ধর্ম মন্ত্রণালয় এক পৃথক আদেশে সরকারি ও বেসরকারি হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েছে।
এই সময়ের মধ্যে দুই লাখ ১৭ হাজার ২৮৮ নম্বর ক্রমিকের মধ্যে থাকা প্রাক-নিবন্ধিতরা নিবন্ধন না করলে পরবর্তী অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ক্রমানুযায়ী কোটার সমসংখ্যক প্রাক-নিবন্ধিতদের নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হবে।
বেসরকারি প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিক নম্বর ২ লাখ ১৭ হাজার ২৮৮ পর্যন্ত চলতি বছরের নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করেছিল ধর্ম মন্ত্রণালয়।
আগামী ১৭ এপ্রিলের মধ্যে ২ লাখ ১৭ হাজার ২৮৮ পর্যন্ত ক্রমিকের প্রাক-নিবন্ধনকারীরা নিবন্ধন না করলে পরবর্তী ক্রমিক নম্বরের প্রাক-নিবন্ধনধারীদের নিবন্ধনের সুযোগ দেওয়া হবে।
বৃহস্পতিবার নিবন্ধনের সময় ৪ দিন বাড়ানো হলেও হজ এজেন্সিগুলো খুশি নন। তাদের দাবি, বৃহস্পতিবার সময় বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হলো ৪ দিন। এর মাঝে ২ দিনই সরকারি ছুটি। মাত্র ২ দিনে নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ করা সম্ভব না।
সৌদি সরকারের নিয়ামানুযায়ী, হজে যেতে নির্দিষ্ট সার্ভারের মাধ্যমে অনলাইনে নিবন্ধন করতে হয়। তবে এই নিবন্ধনের আগে বাংলাদেশে বছর জুড়েই প্রাক-নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু থাকে।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজে যেতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১০ হাজার এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এক লাখ ১৭ হাজার ১৯৮ জন।
কোটার থেকে বেশি প্রাক-নিবন্ধন হওয়ায় ২ লাখ ১৭ হাজার ২৮৮ ক্রমিক চলতি বছরের নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১ সেপ্টেম্বর হজ হওযার কথা রয়েছে।
এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারিভাবে হজে যেতে প্যাকেজ-১ এ তিন লাখ ৮১ হাজার ৫০৮ টাকা এবং প্যাকেজ-২ এ তিন লাখ ১৯ হাজার ৩৫৫ টাকা খরচ হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের মধ্যে ২ হাজার ৬০৪ জন হজ গাইড এবং হজ ব্যবস্থাপনার জন্য এজেন্সির ৮৫০ জন সৌদি যাবেন। বাকি এক লাখ ১৩ হাজার ৭৪৪টি খালি কোটা পূরণের জন্য প্রাক-নিবন্ধনের ক্রমিকের ২ লাখ ১৭ হাজার ২৮৮ পর্যন্ত চলতি বছরের নিবন্ধনের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট হজ এজেন্সি তাদের ব্যাংক হিসাবে নিবন্ধন ভাউচারের মাধ্যমে বিমান ভাড়া বাবদ এক লাখ ২৪ হাজার ৭২৩ টাকা জমা দেবে। হজ এজেন্সি টিকিটের টাকা অন্য কোনো কাজে উত্তোলন করতে পারবে না।
নিবন্ধন কার্যক্রমে নির্বাচিত ব্যাংকগুলো সরকার নির্ধারিত অর্থপ্রাপ্তি নিশ্চিত করে হজযাত্রীদের নিবন্ধন করবে। যারা নিবন্ধনের টাকা জমা দিতে ব্যর্থ হবেন তাদের ক্ষেত্রে কোটা পূরণের জন্য জাতীয় হজ ও ওমরাহ নীতি অনুসরণ করা হবে। সরকার নির্ধারিত ক্রমিক নম্বরের বাইরে কারো কাছ থেকে হজ প্যাকেজের অর্থ নেওয়া যাবে না।
নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের হজ প্যাকেজ-১ এর সরকারি হজযাত্রীদের বাকি তিন লাখ ৫৩ হাজার ৫০৮ টাকা এবং হজ প্যাকেজ-২ এর হজযাত্রীদের বাকি ২ লাখ ৯১ হাজার টাকা জমা দিতে হবে।
ধর্ম মন্ত্রণালয় এক গণবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ২০১৭ সালের হজে প্রাক-নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটিতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) একজন সিনিয়র অধ্যাপকসহ কারিগরি বিশেষজ্ঞগণ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তদন্ত কমিটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে সিস্টেমে কোনো কারিগরি অনিয়মের সত্যতা পায়নি।
এছাড়া হজের প্রাক-নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় ৩২টি হজ এজেন্সির অনিয়মের অভিযোগে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হলে শুনানি শেষে হাইকোর্ট সন্তুষ্ট হয়ে রিট পিটিশনটি খারিজ করে দেন।
এ বিষয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
এমআইএইচ/এসএইচ