ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

লিফট-এসি থাকছে না উপজেলা মডেল মসজিদে

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০১৭
 লিফট-এসি থাকছে না উপজেলা মডেল মসজিদে ৫৬০টি মডেল মসজিদের নকশা

ঢাকা: সারাদেশে নির্মিত হতে যাচ্ছে ৫৬০টি মডেল মসজিদ। দেশের সব জেলা, সিটি কর্পোরেশন, উপকূলীয় এলাকা ও উপজেলায় এসব মসজিদ নির্মাণ করবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। তবে ৬৪টি জেলা শহর ও চারটি সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৬৮টি মডেল মসজিদে লিফট-এসি থাকলেও উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকাসহ বাকি ৪৯২টিতে থাকছে না।

এসব মসজিদে প্রতিদিন চার লাখ ৪০ হাজার ৪৪০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারীর নামাজের ব্যবস্থা থাকবে।

মসজিদ নির্মাণের লক্ষ্যে একনেক (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ নির্বাহী কমিটি) সভায় ‘ইস্টাবিলিসিং ৫৬০ মডেল মস্ক অ্যান্ড ইসলামিক কালচার সেন্টার ইন জেলা অ্যান্ড উপজেলা অব বাংলাদেশ’ প্রকল্প দ্রুততম সময়ে অনুমোদন দেওয়া হবে।

ইতোমধ্যেই ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকল্পটি তৈরি করে পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে।

পরিকল্পনা কমিশনের এক কর্মকর্তা বাংলানিউজকে বলেন, মূলত ব্যয় কমানোর লক্ষ্যেই শুধুমাত্র জেলা ও চারটি সিটি কর্পোরেশনের মোট ৬৮টি মডেল মসজিদে লিফট-এসির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এগুলোতে এসি-লিফট স্থাপনের সংস্থান রয়েছে। বাকিগুলোতে কোনো লিফট-এসির ব্যবস্থা করা যায়নি।
 
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, তিন ক্যাটাগরিতে মসজিদগুলো নির্মিত হবে। এ ক্যাটাগরিতে ৬৮টি চারতলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদে থাকবে লিফট-এসি। এগুলো নির্মিত হবে ৬৪টি জেলা শহরে এবং চারটি সিটি কর্পোরেশন এলাকায়। এগুলোর আয়তন হবে দুই লাখ ৮১ হাজার ৫৮৪ বর্গমিটার।  

এক লাখ ৬৪ হাজার ৭৪২ বর্গমিটার আয়তনের বি ক্যাটারির মসজিদ হবে ৪৭৬টি। আর ৬১ হাজার ২৫ বর্গমিটার আয়তনের সি ক্যাটাগরির মসজিদ হবে ১৬টি, যেগুলো নির্মিত হবে উপকূলীয় এলাকায়।

এসব মসজিদ নির্মাণে মোট প্রস্তাবিত ব্যয় ৯ হাজার ৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৮ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা থাকবে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের অনুদান।

লাইব্রেরি সুবিধাও থাকবে মডেল মসজিদগুলোতে। প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক একসঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন। ইসলামিক বিষয়ে গবেষণার সুযোগ থাকবে ৬ হাজার ৮০০ জনের। ৫৬ হাজার মুসল্লি সব সময় দোয়া, মোনাজাত করাসহ তসবিহ পড়তে পারবেন।

মসজিদগুলো থেকে প্রতি বছর ১৪ হাজার হাফেজ তৈরির ব্যবস্থা থাকবে। আরো থাকবে ইসলামিক নানা বিষয়সহ প্রতি বছর ১ লাখ ৬৮ হাজার শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা। ২ হাজার ২৪০ জন দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসন ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে প্রকল্পের আওতায়। পবিত্র হজ পালনে করা হবে ৫০ শতাংশ ডিজিটাল নিবন্ধনের ব্যবস্থা।

এসব মসজিদে আরো থাকবে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র এবং মৃতকে গোসল করানোর কক্ষ।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন সূত্র জানায়, লিফট-এসি সম্বলিত ৬৮টি চারতলা মসজিদের প্রতিটির নির্মাণ ব্যয় ১৭ কোটি ৫২ লাখ ৪৪ হাজার টাকা। উপকূলীয় এলাকায় যে ১৬টি চারতলা মসজিদ নির্মিত হবে, সেগুলোর ব্যয় ১৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা করে। অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও বন্যায় এসব মসজিদের কোনো ক্ষতি হবে না। কারণ, এগুলোর নিচতলা ফাঁকা থাকবে। প্রথমতলা ডুবে গেলেও যেন সমস্যা না হয়, সেভাবে অবকাঠামো গড়ে উঠবে।

উপজেলা পর্যায়ের ৩৫০টি এসি-লিফটবিহীন মডেল মসজিদের প্রতিটির নির্মাণ ব্যয় ১৩ কোটি ৮৯ লাখ ১৩ হাজার টাকা। তবে আন্তর্জাতিক মানের অন্য সকল সুযোগ-সুবিধা থাকবে এ মসজিদগুলোতে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক সামীম মোহাম্মদ আফজাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে এসি ব্যবস্থাপনাও কঠিন, সঠিক জনবলও পাওয়া যায় না। ফলে এগুলো অকেজো হয়ে পড়তে পারে। ব্যবস্থাপনা না করা গেলে অহেতুক খরচ বাড়িয়ে লাভ কি? তাই আমরা উপজেলা পর্যায়ে এসি-লিফট স্থাপন করবো না’।

অনেক সময় উপজেলা পর্যায়ে বিদ্যুৎও থাকে না বলে জানান সামীম মোহাম্মদ আফজাল।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।