ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

সত্যের সামনে বিনয়ী ও নত হলেই মিলবে হেদায়েত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
সত্যের সামনে বিনয়ী ও নত হলেই মিলবে হেদায়েত যারা হেদায়েতপ্রাপ্ত হতে চায়- অবশ্যই তাদেরকে সত্যের সামনে বিনয়ী ও নত হতে হবে, একইসঙ্গে পবিত্র কোরআনের ওপর প্রকৃত ঈমান থাকতে হবে

কোরআনে কারিমের সূরা নমলের ৮০ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘মৃতকে তুমি তোমার আহবান শোনাতে পারো না এবং বধিরকেও কথা শোনাতে পারো না, যখন ওরা মুখ ফিরিয়ে নেয়।’

এ আয়াতের পরেই অাল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘এবং অন্ধদেরকে পথ বাতলে দিয়ে বিপথগামী হওয়া থেকে বাঁচাতে পারো না। তুমি কেবল নিজের কথা তাদেরকেই শোনাতে পারো, যারা আমার আয়াতর প্রতি ঈমান আনে এবং তারপর অনুগত হয়ে যায়।

সূরা নমলের এই দুই আয়াতের আগের আয়াতগুলোতে বলা হয়েছে, পবিত্র কোরআন সৎ পথ প্রদর্শন করে। কিন্তু শক্ররা অন্ধভাবে কোরআনের বিরোধিতা করে।

আসলে যারা হিংসা, অহংকার, জেদ ও কুসংস্কারে বিশ্বাস করে- তারা জীবিত অবস্থাতেও মৃত ব্যক্তির মতো। এ ধরনের মানুষের ওপর সত্যের বাণী কোনো প্রভাবই ফেলে না।  

একইসঙ্গে তারা এমন জীবিত ব্যক্তির মতো যারা সতর্কবাণী শুনতে পায় না এবং নিজের অন্যায় পথচলা অব্যাহত রাখে। যেমনিভাবে একজন বধিরকে পেছন থেকে ডাকলেও সে শুনতে পায় না। একইভাবে কাফেররা সত্য পথ দেখেও দেখে না এবং সত্যের বাণী শুনেও তা উপলব্ধি করতে পারে না। তারা অন্ধ ও বধির।

যারা হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ও কোরআনে কারিমের মাধ্যমে হেদায়েতপ্রাপ্ত হতে চায়, অবশ্যই তাদেরকে সত্যের সামনে বিনয়ী ও নত হতে হবে। একইসঙ্গে পবিত্র কোরআনের ওপর প্রকৃত ঈমান থাকতে হবে।  

অন্যভাবে বলা যায়, তারাই কোরআনের মাধ্যমে হেদায়াতপ্রাপ্ত হবে- যারা অন্তরের ও চিন্তাগত বাধা অতিক্রম করতে পারবে। ব্যক্তির পুরোনো চিন্তা-বিশ্বাস ও কুসংস্কার সত্য পথ পাওয়ার ক্ষেত্রে বাধাস্বরূপ।
মৃতকে তুমি তোমার আহবান শোনাতে পারো না এবং বধিরকেও কথা শোনাতে পারো না, যখন ওরা মুখ ফিরিয়ে নেয়
যারা চিন্তাভাবনা না করে পূর্বপুরুষদেরকে অন্ধভাবে অনুসরণ করে তারা সত্যের বাণী শোনার পরও সেটাকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে থাকে। আসলে নবী-রাসূলদের বার্তায় কোনো ভুল কিংবা সমস্যা নেই বরং জেদ ও হিংসার কারণে অনেক মানুষ সঠিক পথ খুজে পায় না।

বস্তুত মানুষের যখন অন্তর মরে যায়, তখন সে সত্য গ্রহণ করতে পারে না। সত্যের বাণী কোনো প্রভাব ফেলে না। যেমনিভাবে কোনো বাল্ব যখন নষ্ট হয়ে যায়- তখন সে বাল্বে হাজার বার বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হলেও তাতে আলো জ্বলে না।

বর্ণিত দুই আয়াতের শিক্ষণীয় বিষয় হলো-

এক. কোরআনে পার্থিব ও আধ্যাত্মিক- এ দুই ধরনের মৃত্যুর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। যারা আল্লাহর আহবানে সাড়া দেয় না এবং কোরআনের বিরোধিতা করে তারা জীবিত অবস্থাতেও মৃত। যদিও বাহ্যিকভাবে তারা দুনিয়াতে স্বাভাবিক জীবনযাপন করে থাকে।

দুই. শুধুমাত্র চোখ, কান, বিবেক থাকলেই হবে না। সত্যকে গ্রহণ করার অর্থাৎ আল্লাহর সামনে আত্মসমর্পণের মন-মানসিকতা থাকতে হবে। আর যদি এ ধরনের মানসিকতা না থাকে তাহলে মানুষ নিজের চোখে সত্যকে দেখে ও শুনেও তা মেনে নেয় না। এমনকি নিজের স্বাথ্যে সত্যকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে।  

আসলে যে ব্যক্তি ঘুমের ভান করে- তাকে হাজার বার ডেকেও ঘুম থেকে জাগিয়ে তোলা সম্ভব নয়।

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।