ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

কষ্ট মুমিনের জীবনের অংশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৯
কষ্ট মুমিনের জীবনের অংশ ছবি : প্রতীকী

দৈনন্দিন জীবনে মাঝে মাঝে কষ্টে পড়তে হয়। এটা জীবনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এই কষ্টের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক বেশ দৃঢ়। অবশ্য কারো কারো জীবনে কষ্টটা বিলাসিতার মতো। আবার কারো ক্ষেত্রে অসহনীয়। তবে আল্লাহ কাউকে সাধ্যতীত বোঝা চাপিয়ে দেন না।

পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আল্লাহ কাউকে তার সাধ্যের অতিরিক্ত বোঝা কখনো দেন না। প্রত্যেকেই যা ভালো করেছে তার পুরস্কার পায়, যা খারাপ করেছে তার পরিণাম ভোগ করে।

’ (সুরা আল-বাকারা, আয়াত: ২৮৬)

মানুষের জীবনে কষ্ট নানান বেশে আসে। প্রতিটা কষ্টে মানুষ কিছু না কিছু হারায়। কেউ কেউ হয়তো ভাবেন, মহান স্রষ্টা আল্লাহ তাআলাকে এতো মেনে চললাম তাও কষ্ট দিলেন, চাকরিটা কেড়ে নিলেন, ফসল নষ্ট করে দিলেন কিংবা প্রিয়জন কেড়ে নিলেন!? স্রষ্টার প্রতি হয়তো বিশাল অভিমান, কী অপরাধে স্রষ্টা এত কষ্ট দিচ্ছেন? অথচ একবারের জন্য হলেও ভাবা উচিত- ‘তিনিই সেই সত্তা, যিনি মানুষকে হাসান এবং কাঁদান। তিনিই তো মৃত্যু দেন, জীবন দেন। ’ (সুরা নাজম, আয়াত: ৪৩)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা, সম্পত্তি, জীবন এবং ফসল হারানো দিয়ে পরীক্ষা করবই। জীবনে কোনো বিপদ আসলে যারা ধৈর্যের সাথে চেষ্টা করে এবং বিপদে পড়লে সঙ্গে সঙ্গে বলে, “আমরা তো আল্লাহরই সম্পত্তি। আল্লাহরই কাছে আমরা শেষ পর্যন্ত ফিরে যাবো” — তাদেরকে সুসংবাদ দাও! ওদের উপর তাদের প্রভুর কাছ থেকে আছে বিশেষ অনুগ্রহ এবং শান্তি। এধরনের মানুষরাই সঠিক পথে আছে। ’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫-১৫৭)

অন্য দিকে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তারা কি লক্ষ্য করে দেখে না যে, প্রতিবছর তাদের উপর দুই-একবার বিপদ আসছে? এরপরও ওরা তওবা করে না, উপলব্ধি করার চেষ্টা করে না। ’ (সুরা আত-তাওবা, আয়াত:১২৬)

প্রিয়নবী (সা.) হাদিসে বলেন, ‘আল্লাহ যার ভালো চান তাকে দুঃখ কষ্টে ফেলেন। ’ (বুখারি, হাদিস নং: ৫৬৪৫)

হাদিসে রাসুল (সা.) আরো বলেন, ‘যদি কারো উপর কোনো কষ্ট আসে, আল্লাহ তাআলা এর কারণে তার গুনাহসমূহ ঝরিয়ে দেন; যেমনভাবে গাছ থেকে পাতা ঝরে পড়ে। ’  (বুখারি, হাদিস নং: ৫৬৮৪)

মানুষের প্রতিটা কষ্টের সঙ্গে সুখ মিশে আছে। ধৈর্যশীল মানুষ সেই সুখের অপেক্ষা করেন। তারা জানেন, জীবনে যত ঘোর আসুক না কেন, এক সময় তা কেটে যাবে। কষ্টের এ সময়গুলোতে ধৈর্য্যের সঙ্গে অবিচল থাকাই মুমিনের গুণ।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘প্রতিটি কষ্টের সঙ্গে অবশ্যই কোনো না কোনো দিক থেকে স্বস্তি রয়েছে। কোনো সন্দেহ নেই, অবশ্যই প্রতিটি কষ্টের সঙ্গে অন্য দিকে স্বস্তি আছেই। ’ (সুরা আল-ইনশিরাহ, আয়াত: ৫-৬)

বলাবাহুল্য, মানুষের প্রতিটি কষ্টই ক্ষণস্থায়ী। আর কষ্টের বিনিময়ে মানুষকে সর্বোত্তম বিনিময় দেওয়া হবে। এ বিষয়ে মহান আল্লাহ প্রতিজ্ঞা করে বলেছেন। অথচ আল্লাহ তাআলা প্রতিজ্ঞা না করলেও কোনো অসুবিধা নেই। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

লেখক, অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর, বাংলাদেশ ব্যাংক।

ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: bn24.islam@gmail.com

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।