ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বিডিআর হত্যাযজ্ঞ: চূড়ান্ত আপিল শুনানির অপেক্ষা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
বিডিআর হত্যাযজ্ঞ: চূড়ান্ত আপিল শুনানির অপেক্ষা ফাইল ফটো

ঢাকা: ১৪ বছর আগে রাজধানীর পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর-বর্তমানে বিজিবি) সদর দফতরে হত্যাযজ্ঞের মামলা হাইকোর্টে নিষ্পত্তির পর এবার আপিল বিভাগে চূড়ান্ত শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

আপিলের সার সংক্ষেপ জমা দেওয়ার পর চলতি বছরেই এ মামলায় আপিল শুনানি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তরে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালায় বিদ্রোহী বিডিআর সদস্যরা। সেই ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান।

এ ঘটনায় করা দু’মামলার মধ্যে হত্যাযজ্ঞের মামলার বিচার কাজ হাইকোর্ট বিভাগে সম্পন্ন হয়েছে। অপরদিকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলা এখনো নিম্ন আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

হত্যাযজ্ঞের মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় দেন বিচারিক আদালত।

এতে ১৫২ জনের ফাঁসি এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় ১৬০ জনের। ১০ বছরসহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজা হয় ২৫৬ জনের। খালাস পান ২৭৮ জন।

নিয়ম অনুসরে ডেথ রেফারেন্স আসে হাইকোর্টে। আপিল করেন আসামিরা। কয়েকজন খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষও।

হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর রায় দেওয়া হয়। রায়ে ফাঁসি বহাল হয় ১৩৯ জনের। যাবজ্জীবন দণ্ড দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। ২২৮ জনের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা হয়। খালাস পান ৪৫ জন।

ওই রায়ের ২৯ হাজার ৫৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে ১১ হাজার ৪০৭ পৃষ্ঠার রায় লিখেছেন বিচারপতি মো. শওকত হোসেন। ১৬ হাজার ৫৫২ পৃষ্ঠার রায় লিখেছেন বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী। আর বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার লিখেছেন ১ হাজার ১০০ পৃষ্ঠার রায়।

এদিকে উচ্চ আদালতে খালাস পাওয়া ও সাজা কমা ৮৩ জনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) দায়ের করেছে।

আসামিপক্ষেও লিভ টু আপিল দায়ের করা হয়েছে আপিল বিভাগে।

রায়ের পৃষ্ঠা বেশি হওয়ায় একটি আপিলের সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৫৬২৩ পৃষ্ঠায়। এতে আপিল করতে অর্থ কষ্ট পড়েন আবেদনকারীরা। পরে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পেপারবুক ছাড়া আপিল করতে প্রধান বিচারপতি প্রশাসনিক আদেশ দেন।

অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় অনেকের ফাঁসি হয়। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে আসে, সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাও আপিল করে। হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে অনেকের সাজা কমেছে, অনেকের বহাল আছে।

তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায়ে যাদের সাজা বহাল আছে। তাদের মধ্যে থেকে ৩৩ জন আপিল বিভাগে আপিল ফাইল করে। এরপর আসামিপক্ষ মামলার আপিলের সার সংক্ষেপ জমা না দেওয়ায় মামলাটা আমরা শুনানি করতে পারছিলাম না। তাদের সারসংক্ষেপ জমা দেওয়ার জন্য আমরা একটা ফাইল করেছি। এ ৩৩টা ফাইল আসবে। তাদের একটা সময় দেওয়া হবে। ওই সময়ের মধ্যে যদি তারা সার সংক্ষেপ জমা না দেয় তাহলে তাদের আপিলটা ডিসমিস হবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি এ বছরই এ মামলাটা শুনানি করতে পারবো।

এদিকে এক মাসের মধ্যে আপিলের সার সংক্ষেপ জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম।

বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
ইএস/জেডএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।